নান্দাইলে বাসার চেম্বারে প্রসব করানোর সময় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

  16-02-2019 07:39PM

পিএনএস, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশের পথে প্রসব ব্যাথায় কাতর রোগি ঝিনুয়ারা বেগম (২৮)কে দালালরা ভাগিয়ে এনে হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে প্রসব করানোর সমময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের সময় প্রসূতি মা’কে গুরুতর অবস্থায় নান্দাইলে উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নান্দাইলে উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর জানান, হাসপাতালে আসার আগেই ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ওই প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও গ্রামের আব্দুর রহিম মধু মিয়ার কন্যা ঝিনুয়ারা বেগম (২৮)’র সাথে একই উপজেলার দাতারাটিয়া গ্রামের গোলাম মোস্তাফার বিয়ের পর দ্বিতীয় সন্তান নেয়ার সময় প্রসব ব্যাথা শুরু হলে শনিবার সকাল ৯ টার দিকে প্রসূতির স্বজনরা নান্দাইলে উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় হাসপাতালে প্রবেশ পথের সামনে থেকে দালাল কল্পনা, বেদেনা, হেলেনা ও নান্দাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক আয়া শাহানা মিলে প্রসূতি ঝিনুয়ারা বেগমকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে একপ্রকার জোর করেই হাসপাতালের সামনে ডা. তাজুল ইসলাম খাঁনের চেম্বারে নিয়ে যায়।পরে এ চক্রটি মিলে প্রসব কাজ সম্পন্ন করে। এ সময় ঝিনুয়ারা জীবিত ছেলে সন্তানের জন্ম দিলেও তার প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রোগির অবস্থা দ্রুত অবনতি হতে থাকলে ওই দালালরা চক্রটি মিলে প্রসূতি ঝিনুয়ারাকে নান্দাইলে উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। কিন্তু এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর প্রসূতি ঝিনুয়ারাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে দ্রুত দালাল চক্রটি পালিয়ে যায়।

পরে ওই দালাল চক্রের সদস্যরা অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি বিভিন্নভাবে মিটমাট করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে মৃত ঝিনুয়ারার লাশ স্বামীর বড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তবে ঘটনার পর পরই নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

ঝিনুয়ারার স্বামী গোলাম মোস্তফা মোবাইল ফোনে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, খবর পেয়ে ঢাকা থেকে আমি বাড়ির পথে রওনা হয়েছি। বাড়ি এসে এ বিষয়ে আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেব।

নান্দাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী এনামূল হক বলেন,ওই রোগি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আসার আগেই মারা গেছে। হাসপাতাল ক্যাম্পাসে দালাল চত্রেুর তৎপরতার বিষয়টি আমার জানা নেই, আমি এ মাসের প্রথম সপ্তাহে এখানে যোগদান করেছি। দালালদের ব্যাপারে আগামী স্বাস্থ্যসেবা কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা করা হবে। তবে কোন অনিয়ম দেখা গেলে তা দূর করা হবে বলে আরও জানান তিনি।

এদিকে ডাঃ তাজুল ইসলাম খাঁনের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, এবিষয়ে তিনি কোন কিছু জানেন না। বর্তমানে তিনি নেত্রকোনার সিভিল সার্জন হিসাবে দায়িত্বরত আছেন। প্রতি সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার নান্দাইলের এই চেম্বারে রোগি দেখে থাকেন তিনি।

অপরদিকে একটি সুত্রে জানাযায়, প্রসূতিকে প্রথমে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রোগিকে হাসপাতালে ভর্তি হবার সুযোগ না দিয়ে ওই বেসরকারী কথিত ক্লিনিকে পাঠিয়ে দেয়। এ রিপোর্ট পাঠানো পর্যন্ত এ ব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে জানাগেছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল




@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন