চিকিৎসার টাকা নেই তবুও মেয়েকে বাঁচাতে হাসপাতালে অসহায় মা

  19-02-2019 04:52PM

পিএনএস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : দুই বছর বয়সী জান্নাত। কোমরে ও পায়ে ছোটবড় চারটি টিউমার নিয়ে এই শিশু অসহনীয় জীবন পার করছে দীর্ঘ দিন যাবত। কয়েকমাস যাবত শিশুটি বিছানা ছাড়া। রাতে ঘুমায় মায়ের কোলে। এতে মায়েরও চোখে ঘুম নেই। গত দুইমাস আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির কোমরের অংশ থেকে অন্তত সাড়ে তিন কেজি ওজনের টিউমার অপসারণ করেন চিকিৎসক। ওই চিকিৎসায় প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয়। তখন চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন আরো অন্তত তিন দফা অপারেশনের পর শিশুটি সুস্থ হওয়া সম্ভব। এতে সকল কিছু মিলিয়ে প্রায় তিন লক্ষ টাকার প্রয়োজন। গত সপ্তাহে ওই হাসপাতালে গিয়েও টাকার অভাবে ফিরে আসে শিশুর পরিবার। শিশু মেয়ের চিকিৎসার টাকা জোগাতে হতদরিদ্র পরিবারটি দিশেহারা।

এদিকে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখা দিলে পরিবারটির একমাত্র উপর্জনের ক্ষেত্র 'ধান মাড়াই' মেশিন বিক্রির মাত্র পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে শিশু জান্নাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান তার পরিবার। এই মেডিকেল কলেজের পঞ্চম তলায় শিশু ওয়ার্ডে ৫১৮ নম্বর রুমে আছে শিশু জান্নাত। এই ওয়ার্ডে রোগীর চাপ থাকায় ফ্লোরে মায়ের কোলে রেখেই চিকিৎসা চলছে শিশুটির।

শিশু জান্নাতের অসহায় মাতা মোছাঃ মুসলিমা বেগম মেয়েকে বাঁচাতে সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়ে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, আপনারা (গণমাধ্যম) আমার শিশুটিকে বাঁচাতে সহায়তা করুন। আমার পরিবারের অক্ষমতা ও আমার আবেদনের বার্তা সমাজের দয়ালু ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দেন। টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মেয়ে আমার চোখের সামনে মারা যাবে, তা মা হিসেবে আমি সহ্য করতে পারবো না। শেষ সম্বল বিক্রি করে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে মেয়েকে হাসপাতালে এসেছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস কেউ না কেউ আমার জান্নাতকে বাঁচাতে এগিয়ে আসবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আখিঁতারা গ্রামের দিনমজুর মোঃ আসাদ মিয়ার মেয়ে শিশু জান্নাত। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে জান্নাত সকলের ছোট।

শিশুটির পিতা আসাদ মিয়া এই প্রতিবেদককে বলেন, জান্নাতের প্রথম অপারেশনে প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়। সব টাকা সুদে আনা। আরো তিনটি অপারেশন লাগবে। ধান মাড়াই মেশিন ছিল আমার রোজগারের সম্বল। মেয়ের চিকিৎসায় তা বিক্রি করে, এখন দিনমজুরি দেই। এতে যে টাকা রোজগার হয়, তাতে সংসার চালানো কষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে আমার মিনতি, আদরের শিশু মেয়েটিকে বাঁচাতে আপনারা সকলে জান্নাতের মুখের দিকে চেয়ে তার চিকিৎসায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। আমার পরিবার, আপনাদের কাছে চির ঋণী হয়ে থাকবে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল




@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন