স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে মরলেন সিলেটের পারভীন

  15-03-2019 07:59PM

পিএনএস ডেস্ক : নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত তিন বাংলাদেশির মধ্যে একজন হলেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার হুসনে আরা পারভীন (৪২)। সন্ত্রাসী হামলা থেকে স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে অস্ত্রধারীদের গুলিতে তিনি প্রাণ হারান। তবে বেঁচে গেছেন তার অসুস্থ স্বামী ফরিদ উদ্দিন আহমদ।

সন্ত্রাসী হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া পারভীনের স্বামী ফরিদ উদ্দিন আহমদ বর্তমানে ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে তাদের বাসায় রয়েছেন।

ফরিদ উদ্দিনের বাড়ি বিশ্বনাথ উপজেলার চক রামপাশা গ্রামে। তার স্ত্রী হুসনে আরা পারভীনের বাবার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জের জাঙ্গাল হাটা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত নুরুদ্দিনের মেয়ে। তারা তিন বোন ও দুই ভাই।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহত হুসনে আরার ভাগ্নে মাহফুজ চৌধুরী। তিনি বলেন, নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় দুটি মসজিদ রয়েছে। একটি মসজিদে নারীরা ও অন্যটিতে পুরুষরা নামাজ আদায় করেন। ঘটনার প্রায় আধঘণ্টা আগে আমার খালা হুসনে আরা তার অসুস্থ স্বামীকে (প্যারালাইসিসে আক্রান্ত) নিয়ে মসজিদে যান। সেখানে খালা তার স্বামীকে হুইল চেয়ারে করে পুরুষদের মসজিদের ভেতরে রেখে নিজে নারীদের মসজিদে চলে যান। দুটি মসজিদই পাশাপাশি।

মাহফুজ চৌধুরী বলেন, প্রায় ১৫ মিনিট পর পুরুষদের মসজিদের ভেতরে গুলির শব্দ শুনে পারভীন তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য বের হন। এসময় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাকে গুলি করলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

তিনি জানান, নিউ জিল্যান্ডের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পারভীনের মরদেহ এখনো তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেনি। পুলিশের পক্ষ থেকে পারভীনের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিউ জিল্যান্ডে অবস্থানকারী তার স্বজনদের জানানো হয়েছে।

নিউ জিল্যান্ডে বসবাসকারী আত্মীয়দের বরাত দিয়ে মাহফুজ চৌধুরী বলেন, মসজিদের বাইরে গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন মুসল্লি হুইল চেয়ারে করে ফরিদ উদ্দিনকে মসজিদ থেকে বের করে নেয়ায় তিনি বেঁচে গেছেন। ফরিদ উদ্দিন ও হুসনে আরা পারভীন ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় বসবাস করতেন।

নিউ জিল্যান্ডে বসবাসকারী নিহত পারভীনের ভাবি হিমা বেগম ঘটনার পর টেলিফোনে সিলেটে থাকা পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানান। মাহফুজ চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাসী হামলার প্রায় একঘণ্টা পর বাংলাদেশ সময় আনুমানিক সকাল ১০ টার দিকে হিমা বেগম ফোন করে পারভীন খালার নিহতের খবরটি আমাদের জানিয়েছেন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত পারভীন ও ফরিদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ১৯৯৪ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর তারা নিউ জিল্যান্ডে চলে যান। সর্বশেষ ২০০৯ সালে তারা বাংলাদেশে এসেছিলেন।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন