রামপালে ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে অনিয়মের অভিযোগ

  23-06-2019 08:58PM

পিএনএস, স্টাফ রিপোর্টার (বাগেরহাট) : রামপালে হতদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অসুস্থ্য থাকায় ও কাজ দেখভাল করার লোকবলের অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশয় দেখা দিয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চলমান ৪০ দিনের কর্মসূচীর ২য় পর্যায়ের প্রকল্প এলাকার আশপাশের বাসিন্দাদের তথ্য মতে ও সরোজমিনে খোজখবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতি শ্রমিকের ৩৫ ঘনফুট মাটি কাটার কথা থাকলেও বাস্তবে ৫ থেকে ১০ ঘনফুট মাটি অধিকাংশ প্রকল্পে কাটা হয়নি। গত শনিবার সদর ইউনিয়নের নিতিশ মেম্বরের বাড়ি থেকে ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তার কাজে ২৭ জনের বিপরীতে ১৬ জনকে কাজ করতে দেখা যায়।

শ্রমিক সরদার যতিশ মন্ডল জানান, ২৭ জনের মধ্যে ২৫ জনের বিল তোলেন নিতিশ মেম্বর। হুড়কা ইউপির ১নং ওয়ার্ডের পরিমল মেম্বরের দোয়ানিয়া বেলাইয়ের রাস্তায় গিয়ে দেখা যায় ৩৯ জন শ্রমিকের মধ্যে ২৬ জন কাজ করছেন। ওই প্রকল্পের সরদার সুনিল বিশ্বাস জানান, পরিমল মেম্বর ঈদের আগে ৩৫ জনের ২ সপ্তাহের বিল তুলেছেন। এ ব্যাপারে ওই প্রকল্পের সভাপতি পরিমল মেম্বর জানান, ৩০ থেকে ৩২ জন রোজ হাজির হন। হুড়কার বুলবুলি বেগমের প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায় ২৫ জন শ্রমিকের স্থলে ১৩ জন কাজ করছেন। কিন্তু বিল তোলেন তিনি ২২/২৩ জনের। এ ব্যাপারে বুলবুলি মেম্বর বলেন, কয় জনের বিল তুলি তা সাংবাদিকরা জানেন। একই ইউনিয়নের অনিমেষ মন্ডল (মঙ্গল) মেম্বরের প্রকল্পে গিয়ে সকল শ্রমিককে উপস্থিত দেখতে পাওয়া যায়। রামপাল সদর ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া এলাকায় মহিলা মেম্বর ছালিমা আক্তার উর্মির প্রকল্পে গিয়ে ৩০ জনের মধ্যে ২২ জনকে কাজ করতে দেখা যায়। একই ইউনিয়নের শ্রীফলতলা এলাকায় গিয়ে অপর মহিলা মেম্বর জোসনা বেগম এর প্রকল্পে ২৮ জনের মধ্যে ৭ জনকে কাজ করতে দেখা যায়। ওই প্রকল্পের শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা শুরু থেকেই ৭/৮ জন কাজ করে আসছেন। পাশাপাশি ৮নং ওয়ার্ডের মিকাইল মেম্বরের প্রকল্পে ২৭ জনের মধ্যে ১৬ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এরপর বাঁশতলী ইউনিয়নের গিলাতলা এলাকায় ফকির নজরুল ইসলাম মুক্ত এর প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায় ৪২ জনের মধ্যে ৩১ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এমন চিত্র উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে রামপাল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নাহিদুজ্জামানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি অসুস্থতা ও জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, অনুপস্থিত শ্রমিকের বিপরীতে কোন পারিশ্রমিক দেওয়া হবেনা। তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেন। ৪০ দিনের কর্মসূচীর বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পাল এর সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, কোন অনিয়ম বা কারো কোন গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন