ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোপ্লাবিত

  15-07-2019 06:22PM

পিএনএস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আখাউড়া উপজেলা অব্যাহত ভারী বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ ইতিমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের সবজি ক্ষেত, ফসলি জমি, পুকুরসহ এলাকার রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর।

রোববার রাত থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এদিকে, অতি বৃষ্টি ও ওপারের পাহাড়ী ঢলের পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট কার্যালয় হয়ে ভারতগামী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, আখাউড়ার হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙ্গে এবং স্থল বন্দর এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে চলা কালন্দি খালটি দিয়ে ভারতীয় পাহাড়ী ঢলের পানি হু হু করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এতে করে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আখাউড়া-আগরতলা সড়কের দু’পাশের কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আব্দুল্লাহপুর, বঙ্গেরচর ও সাহেব নগর গ্রামের রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর তলিয়ে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে, সোমবার সকাল থেকে ফের ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে আখাউড়া-আগরতলার একমাত্র ট্রানজিট সড়কের অধিকাংশ জায়গা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় স্থল বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ও আমদানি রফতানি পণ্যবাহী পরিবহন চলাচলসহ পার্সপোর্টধারী যাত্রী সাধারণের যাতায়াতে ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অন্যদিকে, রোববার দুপুরে আখাউড়ায় হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙ্গে কর্ণেল বাজার এলাকা দিয়ে প্রবেশ করা পাহাড়ী ঢলের পানিতে উপজেলার মনিয়ন্দ, মোগড়া ও ধরখার ইউনিয়নের ভাটামাথা, চন্দ্রপুর, ধরখার গ্রাম, ভিনাউটি, ভবানীপুর, রুটি, খারকুট, মিনারকুট, কুড়িবিল, পদ্মবিল, টনকি, ইটনা, কর্ণেল বাজার, খলাপাড়া, কুসুমবাড়ি, আওরারচর, উমেদপুর, সেনারবাদি, ছয়ঘরিয়া, বাউতলা, দরুইন, বচিয়ারা, বাগানবাড়ি, নোয়াপাড়া, নিলাখাত, টানুয়াপাড়া, ধাতুর পহেলা, চরনারায়নপুর ও আদমপুরসহ আখাউড়া পৌর শহরের তারাগন গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে কৃষকের রোপা ফসলি জমি ও সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এছাড়াও তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট।

উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের কৃষকের সবজি ক্ষেত ও ঘরবাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। নিচু এলাকার সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। ত্রিপুরার পাহাড়ী ঢলের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় পুকুরে মাছ ভেসে যাচ্ছে।

দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন জানান, ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ী ঢলের পানি কালন্দি খাল দিয়ে সামনের দিকে দ্রুত সরতে পারছে না। অন্যদিকে হাওড়া নদীর বাঁধ ভাঙ্গার কারণে দক্ষিণ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার রেইনা জানান, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। ঢলের পানিতে যাদের বসতঘর ঝুঁকিপূর্ণ (মাটির ঘর) তাদেরকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নেয়া হচ্ছে।

তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে ত্রাণ প্রক্রিয়া কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন