তোর কারণে আসামি হয়েছি বলেই উপর্যুপরি কোপাতে থাকে হাসান

  15-07-2019 06:29PM

পিএনএস ডেস্ক : তোর কারণে আমি মামলায় আসামি হয়েছি বলে মারতে মারতে খাস কামরায় নিয়ে বিচারকের সামনেই উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে ফারুক নামে এক যুবককে হত্যা করেছে হাসান। ফারুক ও হাসান সম্পর্কে মামাতো-ফুপাতো ভাই।

সোমবার সকাল সোয়া ১১টায় কুমিল্লার অতিরিক্ত ৩ য় দায়রা জজ আদালতে বিচারকের সামনেই এক আসামিকে কুপিয়ে খুন করে অপর এক আসামি। এ ঘটনায় দ্রুত এজলাস ত্যাগ করে পাশের অন্য একটি কক্ষে চলে যান বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস।

নিহত ফারুক (৩০) জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের ওয়াহিদুল্লার ছেলে। সে পেশায় রাজ মিস্ত্রি। ঘাতক হাসানকে (২৫) এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে লাকসাম উপজেলা ভোচপাড়া গ্রামের মৃত শহীদুল্লার ছেলে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিনিয়র কুমিল্লা জেলা দায়রা জজ আলী আকবর, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ পিবিআই কর্মকর্তাগণ।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর সালেহীন ইমন এবং ডিআইও-১ মাহবুব মোরশেদ।

পুলিশ জানায়, সোমবার জেলার মনোহরগঞ্জ থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় হাজিরা দিতে আসেন আসামি হাসান এবং ফারুক। দুপুরে অতিরিক্ত ৩য় দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস আসনে বসলে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

মামলার শুনানিকালে ফারুকের কারণে হাসান মামলায় আসামি হতে হয়েছে এমন অভিযোগ করে ফারুককে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হাসান। এ সময় আদালতের আইনজীবী এবং বিচারকের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আদালতের বারান্দাসহ আশপাশে থাকা লোকজন দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে।

বাঙ্গরা বাজার থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্য ফিরোজ আহাম্মেদ সাথে সাথেই বিচারকের খাস কামরায় গিয়ে ঘাতক হাসানকে আটক করে ছুরিটি উদ্ধার করে।

উপস্থিত আইনজীবী এবং সহকারীরা ফারুককে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফারুককে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘাতক হাসান সাথে ছুরি নিয়ে আদালতের এজলাসে প্রবেশ করেন বলে পুলিশ ধারণা করছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম বলেন, ঘাতক হাসানকে আটক করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনার পর থেকে আদালতের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

আদালতের মতো জায়গায় এ রকম ভয়াবহ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন আইনজীবীরা। কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুর রহমান বলেন, ‘যেখানে মানুষ বিচারের জন্য আসে সেখানে এ রকম নৃশংস ঘটনা আদালতের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে’।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন