ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সুলতানপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

  23-07-2019 05:01PM

পিএনএস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে আদালতে মামলা করেছেন ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীর অভিভাবক শেখ সুলতান মিয়া সহকারী জজ আদালতে দায়ের করা মামলাটিতে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসহ মোট ৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আবু মুছা আনছারীর বিরুদ্ধে চরম অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, তিনি ক্ষমতাসীন দলের দাপট দেখিয়ে বিনা ভোটে অবৈধভাবে বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ দীর্ঘদিন যাবত নিজ দখলে রেখেছেন।

সম্প্রতি নিয়ম বহির্ভূতভাবে একজন বিতর্কীত ব্যক্তিকে মোটা অংঙ্কে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করেছেন। বিদ্যালয়ে তার এসব অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে জেলা-উপজেলা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করেও আশানুরূপ কোন ফলাফল না পাওয়ায় শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ সর্বস্তরের ভূক্তভোগী মহলের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি এমন এক পর্যায় পৌঁছছে এ নিয়ে বিভক্ত দু’টি গ্রুপের মধ্যে যে কোন মূহুর্ত্বে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে সচেতনমহল।

বিতর্কিত ওই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবিতে এলাকাবাসী ইতোমধ্যেই প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বিরাজমান এসব সমস্যা প্রতিরোধসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে অতীতের ন্যায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনয়নে ভূক্তভোগী মহল খোদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

যদিও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আবু মুছা আনছারীর বিরুদ্ধে আনীত এলাকাবাসীর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। বিধি মোতাবেক নিয়োগ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

আদালতে করা মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি আবু মুছা আনছারী। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাদের নিয়োগ না দিয়ে মোটা অংঙ্কের অর্থের বিনিময়ে মো. কামাল উদ্দিন নামে একজন বিতর্কীত ব্যক্তিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি। কমিটির সভাপতির অনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শিক্ষক, অভিভাবকসহ এলাকার সর্বস্তরের সচেতন মহলে এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। পরে ওই বিতর্কীত শিক্ষককে সুলতানপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ার জন্য চলতি মাসের ১৮জুলাই বিদ্যালয়ের অভিভাবক মহলের পক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন শেখ সুলতান মিয়া।

অভিভাবক সদস্য মো. হোসেন খান ও সুলতানপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার শেখ আবু কাউছারসহ কয়েকজন স্থানীয় পূর্বপশ্চিমকে জানান, আদালতে বিচারাধীন মামলার বিবাদী পক্ষ মামলার বিধি-বিধানকে অবজ্ঞা করে গোপনে অবৈধ পন্থায় তড়িঘড়ি করে ২০ জুলাই একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের রেজুলেশন খাতায় ১৬ জুলাই নিয়োগ দেয়া হয়েছে মর্মে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যা সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে সত্যটা প্রকাশ পাবে। এই অবৈধপন্থায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবক মহল ও এলাকাবাসী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম চন্দ্র মিত্র পূর্বপশ্চিমকে বলেন, আমি নিয়োগ বোর্ডে ছিলাম না। তবে বিদ্যালয়টিতে বেশ কিছুদিন ধরেই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ঝামেলা চলছে। সমস্যাটি সমাধানে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন