ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ

  17-08-2019 05:43PM

পিএনএস, বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশাল আধুনিক নৌবন্দর টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে প্রতি বছর মাংইকে প্রচার করা হচ্ছে, সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে কেউ যেন লঞ্চে না ওঠে। কিন্তু কে শোনে কার কথা! লঞ্চের খালাসিরা যাত্রীদের ডাকছে। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে যাত্রীরাও লঞ্চে উঠছে। অতিরিক্ত যাত্রী ওঠাতে বাধা দিচ্ছে না প্রশাসন কিংবা মালিকপক্ষ। ১৬ আগস্ট শুক্রবার রাত ৮ টায় বরিশাল লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায়, টানা ৯ দিন ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরছে চাকরিজীবিরা। প্রতিটি লঞ্চ ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের আগেই ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বেশি যাত্রী উঠিয়েছে। এভাবেই ঈদ শেষে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে দক্ষিনাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ।

যাত্রীদের কাছ থেকে জানা যায়, ৯ দিন ছুটি শেষে শুক্রবার ও শনিবার বিপুলসংখ্যক মানুষ ফিরছিল ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার কর্মস্থলে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীদের বড় চাপ হয়েছে শনিবার। গতকাল বরিশাল আধুনিক নৌবন্দর ঘাট ঘুরে দেখা যায়, লঞ্চঘাটে বেসরকারি ২১টি লঞ্চ নোংর করা। বিকেল ৪টার মধ্যে সব কটি লঞ্চ যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। ডেকে স্থান না পেয়ে যাত্রীরা লঞ্চের ছাদ, কেবিন করিডর ও বারান্দায় অথবা ইঞ্চিলের পাশে বিছানা বিছিয়ে ঠাঁই নেয়। লঞ্চের তৃতীয় ও চতুর্থ তলার হুইল রুমের সামনেও বিছানা পাততে দেখা গেছে যাত্রীদের।

অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের যাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসী বলেন, ‘দুপুরের দিকে কাউখালী থেকে লঞ্চঘাটে এসে দেখি, সব লঞ্চের ডেক ভর্তি। পরে কেবিন বয়দের অনুরোধ করে করিডরে বিছানা পেতে জায়গা করে নিয়েছি। যে জায়গাটুকু পেয়েছি, এতে একজনের স্থলে পরিবারের চার সদস্যকে যেতে হবে।’

সুরভি-৯ লঞ্চের কেবিনের যাত্রী সাব্বির আহমেদ রাজন বলেন, ‘কেবিন হলো সংরক্ষিত এলাকা। যাত্রীরা অতিরিক্ত পয়সা খরচ করে কেবিন নেয় একটু আরাম করে যাওয়ার জন্য, কিন্তু অধিক মুনাফার লোভে যাত্রীসেবার কথা ভুলে কেবিনের চলাচলের পথেও যাত্রী বসাচ্ছে মালিকরা। ফলে একবার কেবিনে প্রবেশ করলে আর বের হওয়ার সুযোগ নেই।’ গতকাল দুপুর থেকে নৌবন্দর ভবনে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে মাইকে বারবার বলা হচ্ছিল, সুরভি-৮ ও ৯, কীর্তনখোলা-১০, পারাবাত-১০, ১১ ও ১২, কুয়াকাটা-২ এবং সুন্দরবন-১০ ও ১১ লঞ্চের তৃতীয় তলার হুইল রুমের সামনে থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিতে। কিন্তু এ নিয়ে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ যাত্রীবাহী লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে না ওঠার জন্য আমরা যাত্রীদের নিষেধ করলেও তারা শুনছে না। রমজানের ঈদ, কোরবানির ঈদের ছুটিতে যাত্রীর চাপ বেশি থাকায় অনেক সময় সামাল দেওয়া সম্ভব হয় না।’

বরিশালের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপপরিচালক আজমল হুদা সরকার মিঠু বলেন, ‘শুক্রবার-শনি এই দু’দিন বরিশাল থেকে ২১টি ও ভায়া রুটের আরো ১০টি বেসরকারি লঞ্চ ছেড়ে গেছে।’

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন