বগুড়ায় হঠাৎ যে কারণে বেড়েছে দই-মিষ্টির দাম!

  22-08-2019 05:39AM

পিএনএস ডেস্ক: যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই বগুড়ায় দই-মিষ্টির বিক্রেতারা হঠাৎ বাড়িয়ে দিয়েছেন দাম। প্রতি হাঁড়ি দইয়ের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা। আর মিষ্টির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কেজিতে ৫০ টাকা করে। দই-মিষ্টির বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে দুধের দাম বেশি বলে দাম বাড়ানো হয়েছে। অথচ খোলা বাজারে এখনো দুধ বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই ৪০ থেকে ৫০ টাকা লিটার। আর চিনির দামও রয়েছে আগের মতোই। দাম বাড়ানোর কথা বলে ক্রেতাদের ঠকিয়ে অধিক মুনাফার চেষ্টা করছে বগুড়ার অসাধু দই-মিষ্টির বিক্রেতারা। এনিয়ে বগুড়ায় চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই চেয়েছেন প্রশাসনের সহযোগিতা। কিন্তু অদ্যাবধি প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

বগুড়ার বিভিন্ন দই ও মিষ্টি বিক্রির দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের সময় দুধ পাওয়া যাচ্ছে না এমন ওজুহাত দেখিয়ে হঠাৎ তারা দুধ দিয়ে তৈরি সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। আর এখন তারা সেটি স্থায়ী করেেত চাইছে। দাম বাড়ানোর ফলে ক্রেতা অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ দাম নিয়ন্ত্রণে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন থেকে। মাঝে-মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও ঈদের পর এ কার্যক্রম চোখে পড়েনি। দাম বাড়ানোর প্রতিবাদ করে অনেক ক্রেতা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। জেলা শহরের এশিয়া সুইটমিট নামের দই-মিষ্টির দোকানে মঙ্গলবার সাধারণ মিষ্টি বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা কেজি। এ মিষ্টি ঈদের আগে বিক্রি হতো ২০০ টাকায়। স্পেশাল মিষ্টি বিক্রি হতো ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা। আর এখন সেই মিষ্টি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি। রসমলাই, মালাইচপ মিষ্টি, স্পঞ্জ মিষ্টি, সাধারণ সন্দেশ ও স্পেশাল সন্দেশের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর স্পেশাল দই ২০০ থেকে বাড়িয়ে ২২০, শাহি দই ২০০ থেকে বাড়িয়ে ২৪০ ও সাদা দই ৬৫০ গ্রাম ১৬০ থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকায় বিক্রি করছে। এশিয়ার পাশাপাশি শ্যামলী হোটেলে স্পেশাল দই ১৬০ থেকে বাড়িয়ে ১৮০, শাহী দই ১৮০ থেকে বাড়িয়ে ২০০, সাদা মিষ্টি ১৮০ থেকে বাড়িয়ে ২০০, ছানারোল মিষ্টি ৩৮০ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ ও চমচম ৩৬০ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করছে। আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেলের মালাই দই ২৪০ বাড়িয়ে ২৬০ ও সাদা দই ১৬০ থেকে বাড়িয়ে ১৮০ টাকা বিক্রি করছে। দইঘরেও দাম বেড়েছে দুগ্ধপণ্যের। দইঘরের স্পেশাল দই বিক্রি করছে ১৮০ থেকে বাড়িয়ে ২২০, ছোট দই ১০০ থেকে ১২০, সাদা দই ১৮০ থেকে বাড়িয়ে ২০০, কালোজাম ১৮০ থেকে বাড়িয়ে ২১০ ও চমচম ২০০ থেকে বাড়িয়ে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। বগুড়া শহরের কবি নজরুল ইসলাম সড়কে দই ক্রেতা আবদুল আজিজ ঠা ু জানান, ঈদের কয়েক দিন আগে দাম কম ছিল। ঈদের দিন থেকে দই ও মিষ্টির দাম বাড়ানো হয়েছে। ঈদের আগে ও পরে দুধের লিটার ছিল ৬০ টাকা। এই দুধের দাম এখন ৪০ টাকা লিটার। কোনো কোনো স্থানে ৫০ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। দুধের দাম কমলেও তা থেকে তৈরি খাদ্যপণ্যের দাম কমছে না। আরেক ক্রেতা আবদুস সালাম জানান, ঈদের আগের চেয়ে বর্তমানে মিষ্টি কেজিপ্রতি গড়ে ৫০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছে। আর দইয়ের দাম বাড়ানো হয়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। দই-মিষ্টির বিক্রেতারা যে অজুহাত দেখাচ্ছেন তা সঠিক নয়। দুধ ও চিনি আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। তারপরও মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে ক্রেতাদের ঠকানো হচ্ছে। প্রসাশনকে এ বিষয়ে ভূমিকা নিতে হবে। দইঘরের ব্যবস্থাপক এনামুল হক জানান, বাজারে দুধের দাম লিটার প্রতি ২০ টাকা বেড়েছে।

এ কারণে দুধ থেকে তৈরি খাবারের দাম বেড়েছে। তাকে দুধের দাম কমেছে বলে জানানো হলে তিনি বলেন, এরপরও এখন থেকে নতুন দামে বিক্রি হবে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন