ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামীর ওপর হামলা, শ্রমিক লীগ নেতাসহ আটক ৪

  19-09-2019 04:00PM

পিএনএস ডেস্ক : পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় গণধর্ষণের শিকার নারীর স্বামী ও মামলার বাদীকে পিটিয়ে হাত পা-ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় শ্রমিক লীগের নেতাসহ চারজনকে অস্ত্র-মাদকসহ আটক করেছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-৮) সদস্যরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে কলাপাড়া শহরের নতুন বাজার এলাকার হোটেল পানামা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন, পটুয়াখালীর ম‌হিপুর থানার চর চাপলি গ্রামের অধিবাসী ও মামলার প্রধান আসামি শা‌কিল মৃধা, তাঁর সহযোগী একই এলাকার র‌বিউল ভূঁইয়া, র‌বিউল হাওলাদার ও সাইফুল ইসলাম। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, ওয়ান শুটারগান, ১২টি গু‌লি ও ৩৯০টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। র‍্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। আসামি শাকিল মৃধা কলাপাড়ার মহিপুর সাংগঠনিক উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গণধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি।

র‍্যাব জানায়, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় র‌্যাবের-৮-এর উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী জেলার ম‌হিপুর থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেছেন।

গণধর্ষণের শিকার নারীর স্বজনেরা জানান, গত ১৫ এপ্রিল রাতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার প‌শ্চিম চাপলি এলাকায় এক ব্যক্তিকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে তাঁর স্ত্রীকে পাশের বিলের মধ্যে নিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে গত ১৭ এপ্রিল পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। মামলায় একই এলাকার শাহ আলম মাঝিকে প্রধান আসামি এবং শাহীন, রবিউল, আল-আমিন, আবদুর রশিদ, শ্রমিক লীগের নেতা শাকিল মৃধাসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে কলাপাড়া থানায় গত ২৩ এপ্রিল মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এরপর মহিপুর থানার পুলিশ এই মামলায় রবিউল ও মামুন নামে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে। গত ১ জুলাই এই মামলায় শ্রমিক লীগের নেতা শাকিল মৃধাসহ সাতজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মহিপুর থানার পরিদর্শক মাহবুবুল আলম। এরপর শাকিল মৃধা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। পরে তিনি জেলার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠান। সম্প্রতি তিনি জামিনে মুক্তি পান।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, শুরু থেকেই এই ধর্ষণ মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে একাধিকবার হুমকি দিচ্ছিলেন শাকিলসহ অন্য আসামিরা। কিন্তু এতে রাজি না হওয়ায় গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কলাপাড়া উপজেলার চাপলি বাজারের ইউনিয়ন পরিষদের সামনের একটি চায়ের দোকানে ওই মামলার বাদীর ওপর শাকিল মৃধার নেতৃত্বে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে গুরুতর আহত ওই ব্যক্তিকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে গতকাল বুধবার সকালে তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর ডান হাত-পা ভেঙে কয়েক টুকরো হয়ে গেছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম রয়েছে। আহত ব্যক্তির চাচাতো ভাই গতকাল বলেন, তিনি কথা বলতে বা কিছু মুখে নিতে পারছেন না।

এ প্রসঙ্গে র‌্যাব-৮-এর উপ-অধিনায়ক মেজর খান স‌জিবুল ইসলাম আজ সকালে বলেন, ওই হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই আসামিদের আটক করা হয়েছে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন