ঝালকাঠিতে গৃহবধূ হত্যা মামলায় ২ জনের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন

  23-09-2019 09:03PM

পিএনএস ডেস্ক : ঝালকাঠিতে চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ আনোয়ারা বেগম হত্যা মামলার দুই আসামিকে ফাঁসি এবং অপর তিন আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শেখ মো. তোফায়েল হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের রাজপাশা গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে খায়রুল আলম ওরফে শেখ হাসান ও মৃত জালাল সরদারের ছেলে পিল্টন ওরফে পিন্টু। যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন- একই গ্রামের আবুল হোসেনের দুই ছেলে রিপন মিয়া ও সালাম মিয়া এবং আব্দুস সোবাহানের ছেলে সাহাদাৎ হোসেন।

মামলার বিররণে জানা যায়, ২০০২ সালের ১৭ মে রাতে ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের রাজপাশা গ্রামে নিহত আনোয়ারা বেগমের ছেলে লিটন সিকদারকে হত্যা ও তাদের বাড়িতে ডাকাতি করতে আসে দণ্ডিতরা। এসময় লিটন সিকদারের মা আনোয়ারা বেগম কুপি বাতি জ্বালিয়ে দিলে একই গ্রামের এ আসামিদের চিনে ফেলেন তিনি। এসময় ওই আসামিরা আনোয়ারা বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে।

এ ঘটনার পূর্বে শেখেরহাট ইউনিয়নের রাজপাশা গ্রামের এক বাড়িতে ডাকাতি করে একজনকে কুপিয়ে মৃত ভেবে চলে যাওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী বাড়ির আনোয়ারা বেগম তাদের দেখে ফেলে। কুপিয়ে আহত করা লোকটি মারা গেলে প্রত্যক্ষদর্শী আনোয়ারা বেগম প্রধান স্বাক্ষী হতে পারে ভেবে ঘটনার কয়েক দিন পরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদের বাড়িতে এসে হামলা চালায়। প্রথমে তার ছেলে লিটন ঘর থেকে বের হলে তাকে কুপিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রাখে। এসময় আনোয়ারা বেগম ঘর থেকে বের হলে তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে আসামিরা পালিয়ে যায়।

লিটন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকায় দণ্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির প্রধান আসামি খাইরুল আলম ওরফে শেখ হাসান আনোয়ারা বেগম হত্যা ঘটনায় সুকৌশলে বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। কয়েক মাস পর লিটন একটু সুস্থ হলে জানতে পারেন যে তাদের কুপিয়েছে সেই হাসানই বাদী হয়ে তার ব্যক্তিগত শত্রুদের আসামি করে মামলা করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক মোজাম্মেল হক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লিটনের কথা শুনে প্রথম মামলা থেকে সবাইকে অব্যহতি দিয়ে নিজেই বাদি হয়ে ৭ আসামিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

সিআইডির উপ-পরিদর্শক কাজী আশরাফ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জ গঠনের জন্য সুপারিশ করে পাঠায়।

এ ঘটনার পরদিন সদর থানায় একাটি মামলা হলেও পরে গোয়েন্দা পুলিশ (সিআইডি) ২০০৩ সালের ১০ অক্টোবর একই এলাকার ৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ২০০৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সিআইডি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানি ও ১৫ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর দোষী প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় ঘোষণা করেন আদালত।

রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। একই সাথে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামি গিয়াস ও মামুনকে খালাস দিয়েছে আদালত।

রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এম আলম খান কামাল এবং আসামি পক্ষে ছিলেন আব্দুর রশিদ শিকদার।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন