পাইকগাছায় হাট-বাজারে সুপারি

  14-10-2019 05:29PM

পিএনএস, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনার পাইকগাছায় হাট-বাজারে উঠছে প্রচুর পরিমাণে সুপারি। বেচা বিক্রিও হচ্ছে ভালো। চলতি মৌসুমে সুপারির ফলন কম হওয়ায় দাম একটু বেশি। এখন সুপারির ভরা মৌসুম। ফলে বাগান মালিক খুচরা ও পাইকাররা সুপারি বিকিকিনি নিয়ে ব্যস্ত।

সুপারি বাংলাদেশের একটি অর্থকারী ফসল। সুপারি স্থানীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। সুপারি কাঁচা, শুকনা, মজানো (পানিতে ভিজা) পান পাতা দিয়ে মুড়িয়ে খিলি বানিয়ে খাওয়া হয়। সুপারি ছাড়া পানের পূর্ণতার কথা ভাবা যায় না। বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সুপারি ব্যবহার। অনেকের আবার শুধু সুপারি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠির এক দশমাংশ সুপারি খান। সকলে পান-সুপারি খেলেও পুরুষরা বেশি খান। উল্লেখ্য সুপারির কারনে মুখে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা থাকে বেশি।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে, উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। গাছের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার ৪শতটি। গাছ প্রতি গড়ে ফলন ৪শ ৪০টি। প্রায় গাছে ৩ থেকে ৪ কাধি সুপারির ফলন ধরে। সর্বনি¤œ ৫০ থেকে ১৫০ আবার কোনো গাছে ৬ থেকে ৭শ সুপারি ধরে। লবণাক্ত এ উপজেলায় ভূমির অবস্থান উচু ও বিলান এবং নিচু ও বিলান জমির পরিমাণ বেশী। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে হরিঢালী, কপিলমুনি, গদাইপুর ও রাড়–লী সুপারি গাছের পরিমাণ বেশী। উৎপাদিত সুপারি বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি, আগড়ঘাটা, গদাইপুর ও বাঁকা বাজারে বেশি বেচা বিক্রি চলে। চাঁদখালী ইউনিয়ন ও পৌরসভার আংশিক এলাকায় সুপারি গাছ রয়েছে। বাকী ইউনিয়ন গুলোতে গাছ নেই বললেই চলে। সুপারির ভরা মৌসুমে হাট-বাজারে প্রচুর পরিমাণ সুপারি বিক্রি হচ্ছে। বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনের হাটে প্রচুর পরিমাণ সুপারি সরবরাহ করছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে পাইকারী সুপারি ক্রয় করে এলাকার বাইরে মোকাম গুলোতে বিক্রি করছে। তাছাড়া স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীরা সুপারি ক্রয় করে গুদামজাত করছে। যা পরে শুকিয়ে বা পানিতে মজিয়ে পরবর্তীতে বিক্রি করবেন।

উপজেলার গদাইপুর গ্রামের সুপারি বাগান মালিক শফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর সুপারির ফলন খুব ভাল হয়েছে এবং বাজার মূল্য ভাল, এতে তিনি খুশি।

স্থানীয় সুপারি ব্যবসায়ী মতিউর রহমান, মোবারক ঢালী, সিরাজুল ইসলাম সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে প্রচুর পরিমাণ সুপারি উঠছে। শুরু থেকে সুপারির দাম বেশী থাকলেও এখন ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে কুড়ি বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা স্থানীয় হাট-বাজার থেকে পাইকারী সুপারি থেকে বড়দল, সোলাদানা, শান্তাসহ পাশ্ববর্তী হাট-বাজারের আড়ৎ গুলোতে সুপারি বিক্রয় করে। সুপারির হিসাব অঞ্চল হিসাবে ভিন্ন। এ এলাকায় এক কুড়ি (৫৫গোন্ডা) অর্থাৎ ২২০টি সুপারি। মৌসুমের শুরুতে সুপারির দাম বেশী থাকলে বর্তমানে দাম কমে যাওয়ায় স্থানীয় অনেকেই মজুদ করছেন। যা পরবর্তীতে উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করবেন বলে মজুদকারীরা জানিয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, সুপারি এ অঞ্চলের একটি অর্থকারী গুরুত্বপূর্ণ ফসল। তাছাড়া এ এলাকার সুপারির মানও ভালো। তবে লম্বা সুপারি গাছ গুলো মরে যাওয়ায় অথবা কেঁটে ফেলায় নতুন করে সুপারির বাগান তেমন একটা গড়ে উঠছে না। তাই কৃষি অফিস থেকে নতুন করে সুপারি বাগান তৈরীর জন্য বাগান মালিক ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন