চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে রিকশাচালকের মেয়ে পান্নার

  18-10-2019 10:16PM

পিএনএস ডেস্ক : বাবা পেশায় রিকশাচালক। তাই বলে নিজের স্বপ্নের পরিধি কখনো ছোট করেননি চাঁদপুরের মেয়ে পান্না আক্তার। ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতেন চিকিৎসক হওয়ার। অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলও পেয়েছেন, জাতীয় মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে। কিন্তু পান্নার পড়াশোনার খরচ চালানো নিয়ে চিন্তায় ছিল পরিবার। সেই চিন্তা দূর হয়েছে স্থানীয় সাংসদের আশ্বাসে। পান্নার পড়াশোনার যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নজরে আসে চাঁদপুর-৫ ( হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনের সাংসদ মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের। এরপর তিনি মুঠোফোনে কথা বলেন পান্নার মা–বাবার সঙ্গে। তখন তিনি পান্নার পড়াশোনার সব দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল ইউনিয়নের রায়চোঁ গ্রামের রিকশাচালক দুলাল মিয়া ও কোহিনুর বেগমের ছোট মেয়ে পান্না। ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। হাজীগঞ্জ বেলচোঁ উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান তিনি। পরে উচ্চমাধ্যমিকেও জিপিএ-৫ পান হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ থেকে। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে কুমিল্লায় রেখে তাঁকে কোচিং করানো হয়। কুমিল্লায় থাকা-খাওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করেন তাঁর দুই কলেজশিক্ষক বেলাল হোসেন ও বিলকিস আরা বেগম। এ ছাড়া পান্নার স্কুলশিক্ষক শিরিনা শারমিনও শুরু থেকেই উৎসাহ দিয়ে গেছেন পান্নাকে।

পান্নার মা কোহিনুর বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মেয়ে ছোটবেলা থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখত। কিন্তু আমাদের সেই সামর্থ্য ছিল না। মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেলেও অর্থসংকটের কারণে ভর্তি করাতে পারব কি না, সে ব্যাপারে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু আল্লাহর রহমতে স্থানীয় সাংসদ আমার মেয়ের লেখাপড়ার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। সবার কাছে দোয়া চাই, আমার মেয়ে যেন চিকিৎসক হয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের সেবায় এগিয়ে আসতে পারে।’

জানতে চাইলে স্থানীয় সাংসদ মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি পান্নার পাশে দাঁড়িয়েছি যেন সে একজন ভালো চিকিৎসক হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে পারে, আরও দশজনের পাশে দাঁড়াতে পারে। আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি দেশের মানুষের স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য। পান্না যদি আমার এলাকার না–ও হতো, তাহলেও আমি এই চিন্তা-চেতনা থেকেই তাঁর পড়ালেখায় সাহায্য করতাম।’

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান বলেন, ‘মেয়েটির বিষয়ে আমরা জেনেছি। তাঁর মেডিকেল কলেজে ভর্তিসহ অন্যান্য খরচ আমরা বহন করব।’

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন