জিততে হলে বাংলাদেশকে যা করতে হবে

  10-11-2019 06:29PM

পিএনএস ডেস্ক : ভারতের নাগপুরে বাংলাদেশ ও ভারত আজ সন্ধ্যায় মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের অলিখিত ফাইনাল। প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশের জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে বেশ দাপুটে জয় পায় ভারত। ফলে সিরিজ এখন ১-১ সমতায়। ভারতের মাটিতে এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি সিরিজে জয় পেয়েছে।

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রোহিত শর্মার প্রায় ২০০ স্ট্রাইক রেটের একটি ৮৫ রানের ইনিংস ব্যবধান গড়ে দেয় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে। টি-টোয়েন্টিতে ২৬ বল হাতে রেখে ম্যাচ জেতা বড় ব্যাপার। ৮ উইকেটের ব্যবধানটাও এখানে গৌণ হয়ে যায়। ভারত যখন ব্যাট করছিল তখন কখনোই মনে হয়নি যে, এই ম্যাচ বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।

নাগপুরে দলের সাথে থাকা বাংলাদেশের ক্রিকেট সাংবাদিক বর্ষণ কবির বলছেন, "যেভাবে ভারত খেলেছে, বাংলাদেশকে কোনো সুযোগই দেয়নি। আবার বাংলাদেশ যখন প্রথম ম্যাচে জয় পায় তখন ভারতকে তেমন সুযোগ দেয়নি। প্রভাব বলতে বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন আসতে পারে।"

নাগপুরের উইকেট স্বভাবতই স্পিন সহায়ক। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের একটি ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ও ভারত মুখোমুখি হয়। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ভারত নিউজিল্যান্ডকে ১২৬ রানে বেঁধে ফেলে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ৪ ওভারে ১১ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নিয়ে ভারতকে ৭৯ রানে অল আউট করে দেন।

ভারতের মাটিতে স্পিনিং উইকেটে ৪৭ রানের জয় পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ ও ভারত একই ভেন্যুতে মুখোমুখি হচ্ছে যেখানে নিশ্চিতভাবেই সাকিব আল হাসানের অভাব অনুভব করবে বাংলাদেশ। তবে এই ম্যাচে খেলতে পারেন তাইজুল ইসলাম অথবা আরাফাত সানী। অর্থাৎ একজন বাড়তি স্পিনার নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

মুস্তাফিজুর রহমানের গোড়ালিতে হালকা চোট থাকলেও, তার একাদশে থাকা বা না থাকা অনিশ্চিত। নাগপুরের উইকেটে মুস্তাফিজের কাটার বা স্লোয়ার বাড়তি সুবিধা পাবে, কেননা এই উইকেট তার ঘরানার বোলারদের জন্য সহায়ক। ভারতের স্পিন আক্রমণও বাংলাদেশের রানের গতি থামিয়ে দেয়ার কাজ করছে সফলভাবেই।

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ১০ ওভারে ৮০ রান তোলার পরেও, ওয়াশিংটন সুন্দর ও ইয়ুজভেন্দ্রা চাহালের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত শেষ দশ ওভার যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেননি।

বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মোট ৩৮টি ডট বল দিয়েছে। ১২০ বলের খেলায় ৩৮ বেশ বড় একটা অংশ অর্থাৎ প্রায় ৬ ওভার ২ বল। যেহেতু ভারত রান তাড়ায় বেশ পারদর্শী একটি দল, এমন দলের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে রানের গতি কমে যাওয়া একটা নেতিবাচক দিকই। বাংলাদেশ রাজকোটে শেষ ১৮ বলে ১৭ রান তুলেছে। যার ফলে শেষ পর্যন্ত ১৫৩ রানে থামে বাংলাদেশ।

যেহেতু প্রথম ম্যাচ ও দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ সম্পূর্ণ দুটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটের মুখোমুখি হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক ন্যাশনাল ম্যানেজার নাজমুল আবেদীন ফাহিম মনে করেন, বাংলাদেশের উচিত নিজেদের খেলা ভালোভাবে খেলা। বাংলাদেশ নিজেদের খেলা থেকে থেকে দূরে সরে এসেছিল বলে মনে করেন মি: ফাহিম।

দ্বিতীয় ম্যাচে বেশ ভালো একটা পরিস্থিতি থেকে মাঝপথে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা খেই হারিয়ে ফেলেছিল। নাজমুল আবেদীন ফাহিম মনে করেন, "ব্যাটসম্যানদের পক্ষে ভালো প্ল্যাটফর্ম তৈরিকে কাজে লাগাতে হবে।"

মি: ফাহিম বলেন, "আগ্রাসী বোলিং করাটা জরুরী, রক্ষণাত্মক বোলিং করে লাভ হবে না এদের বিপক্ষে। আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়েই বোলিং করতে হবে। কারণ ওরা যদি শুরুর দিকে রান না নেয়, তবু উইকেট থাকলে শেষদিকে রান তুলে ফেলবে তাই রান বাঁচানোর জন্য খেলে আসলে খুব একটা লাভ হবেনা।"

বাংলাদেশকে এখন একজন ব্যাটসম্যান ও একজন বোলার বাড়তি নিয়ে খেলতে হচ্ছে যেটা একাদশ সাজানোর ক্ষেত্রে একটা বড় অন্তরায় বলে মনে করেন মি: ফাহিম। আর এই ঘাটতি তৈরি হয়েছে সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন