স্ত্রীকে হত্যার পর সারা রাত লাশের পাশে বসে ছিল শরিফ

  12-11-2019 07:56AM



পিএনএস ডেস্ক: পরপুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক, মোবাইল ফোনে পরপুরুষের সঙ্গে ঘন ঘন কথা বলা ও স্বামীকে এড়িয়ে চলায় এবং টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করার ক্ষোভে স্ত্রী নিপা আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা শরিফ মিয়া। সারা রাত স্ত্রীর লাশের পাশে বসে থেকে সকালে সে পালিয়ে যায়।

রোববার বিকালে হবিগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নুরুল হুদার কাছে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ সব কথা জানান ঘাতক স্বামী শরিফ মিয়া।

এর সত্যতা নিশ্চিত করেন মাধবপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম দস্তগীর আহমেদ।

এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জহিরুল ইসলাম শনিবার রাতে আশুগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকা থেকে ঘাতক শরিফ মিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করেন।

গত ২৪ অক্টোবর রাতে মাধবপুর উপজেলার ব্যাঙ্গাডুবা গ্রামের ভাড়া বাসায় বানিয়াচং উপজেলার হিয়ালা গ্রামের মৃত নান্নু মিয়ার ছেলে শরিফ মিয়া তার স্ত্রী নিপা আক্তারকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিপার বাবা নাসিরনগর উপজেলার চাপড়তলা গ্রামের আহাদ মিয়া বাদী হয়ে শরিফকে আসামি করে মাধবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আদালতে স্বীকারোক্তিতে শরিফ মিয়া বলেন, ৮-৯ বছর পূর্বে নিপাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের কারণে শরিফের প্রথম স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। দ্বিতীয় স্ত্রী নিপাকে তার গ্রামের বাড়ি হিয়ালা নিতে চাইলে নিপা যেতে রাজি হতো না। এ কারণে নিপাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া থাকত।

তিনি বলেন, শরিফ দিনমজুরের কাজ করে নিপার হাতে সব টাকা তুলে দিত। কিন্তু ঘটনার কিছুদিন আগে নিপা শরিফকে না বলে নয়াপাড়ার ব্যাঙ্গাডুবা গ্রামে এক বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। ঘটনার ৩ দিন আগে নিপা শরিফকে ফোন দিয়ে ব্যাঙ্গাডুবা বাসায় যেতে বলে।

বাসায় যাওয়ার পর শরিফকে দিয়ে বাজার করান। ২৪ অক্টোবর রাতে নিপাকে নিয়ে শরিফ ঘুমাতে যায়। কিন্তু ঘন ঘন নিপার কাছে ফোন আসতে থাকে। কার ফোন জানতে চাইলে নিপা বিষয়টি এড়িয়ে যায়।

রাত ১১টার দিকে অপরিচিত এক পুরুষ লোক বাহির থেকে নিপা নিপা নাম ধরে ডাকতে থাকে। লোকটি চলে যাওয়ার পর নিপাকে শরিফ ঘুম থেকে তুলে তাকে ডাকার কারণ ও ওই লোকটির পরিচয় জানতে চাইলে নিপা শরিফের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে গালি দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলে। এতে শরিফের মাথা গরম হয়ে যায়।

এ কারণে রাত ১২টার দিকে শরিফ নিপার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। সারা রাত লাশের পাশে বসে থেকে ভোর হলে ঘর থেকে শরিফ বেড়িয়ে আশুগঞ্জ বন্দরে গিয়ে খালাসির কাজ নেয়।

পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শরিফকে আশুগঞ্জ নৌবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করেন।

মাধবপুর থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।

পিএনএস/ হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন