২ শিশুর রক্তাক্ত দেহ সবার মনে দাগ কেটেছে!

  12-11-2019 06:19PM

পিএনএস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে হতাহতদের অনেককেই এখনও খুঁজে পাননি স্বজনরা। এরই মধ্যে দু’টি শিশুর রক্তাক্ত দেহ মনে দাগ কেটেছে সবার। এদের মধ্যে একটি শিশু জীবিত থাকলেও অপর শিশুর নিথর দেহ পড়ে আছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জেনারেল হাসপাতালের মর্গের ফ্লোরে। তার নাম সোহা মনি (৩)। হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার সোহেল মিয়া স্ত্রী, ২ সন্তান ও চাচাতো ভাইকে নিয়ে সিলেট থেকে চট্টগ্রামে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। এজন্য রাতে তারা আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেসে ওঠেন। ট্রেনে পরিবারের কেউ তখন ঘুমে, কেউবা আধোঘুমে। হয়তো স্বপ্নও দেখছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তাদের জীবনের সব স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়ে যায়। দুই ট্রেনের সংঘর্ষ কেড়ে নেয় তাদের কন্যাসন্তানকে। সোহা মনি (৩) হবিগঞ্জ থেকে বাবা, মা ও ভাইয়ের সাথে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে যাচ্ছিল চট্রগ্রামে বাবার কর্মস্থলে।

সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার পর সোহাকে আহত অবস্থায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সোহা মনি। কিন্তু সেই সময় তার মা,বাবা বা ভাই কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

এই দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে জানতে পেরে হবিগঞ্জ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন সোহার মামা জামাল উদ্দিন। তিনি হাসপাতালের কোথাও সোহাসহ কাউকে খুঁজে পাননি। পরে হাসপাতালের মর্গে শিশু সোহার মরদেহ দেখতে পান। পরবর্তীতে সোহার বাবা সোহেল মিয়া, মা নাজমা বেগম ও সোহার ভাই সোহাগের (৫) খোঁজ পান। কিন্তু তাদের মধ্যে শিশু সোহাগের অবস্থা কিছুটা ভাল থাকলেও সোহার মায়ের দুটি পা ও একটি হাত দুর্ঘটনায় পুরাপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। আর সোহার বাবা সোহেল মিয়ার দুইটি পা দুর্ঘটনায় হারিয়ে গেছে।

সোহার মামা জামাল উদ্দিন বলেন, সোহাদের বাড়ি হবীগঞ্জের বানিয়াচংয়ে। তার বাবা সোহেল চট্টগ্রামে একটি গার্মেন্টসে চাকুরির সুবাদে তারা সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। গত ৪/৫দিন আগে বাড়িতে বেড়াতে আসে। সোমবার রাতে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, সোহার মা বাবাকে জানানো হয়নি সে যে মারা গেছে। তাদেরকে বলা হয়েছে সে অসুস্থ। সোহার মা, বাবা ও ভাইকে এম্বুলেন্স যোগে হবিগঞ্জে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোহার মরদেহ নিতে আমি রয়ে গেছি। কিন্তু সোহার মা বাবা তাকে দেখতে চাচ্ছেন।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন