পাইকগাছায় ১৫ বছর পর আ.লীগের সম্মেলন

  18-11-2019 08:16PM

পিএনএস, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : প্রায় দেড়যুগ পর আগামী ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন। বিগত ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে যেমন প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে তেমনি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির করায় চরম ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। দলের নিবেদিত ত্যাগী নেতাকর্মীদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে না রেখে অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করায় স্বচ্ছ ও শক্তিশালী কমিটি গঠনে বাঁধাগ্রস্থ হবে বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করেন। এসব অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দিয়ে যদি ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয় তাহলে যোগ্য নেতা নেতৃত্বে আসবেন বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন।

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে দলের মধ্যে ও বাহিরে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। কিছু অনুপ্রবেশকারীদের বিতর্কিত কর্মকান্ডে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল। জানাগেছে, উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুনছুর আলী গাজীর বিরুদ্ধে জেলা ও কেন্দ্রীয় হাই কমান্ডের কাছে অভিযোগ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ২০১২ সালে তৎকালীন চাঁদখালী ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মুনছুর আলী গাজী আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। যোগদানের কয়েক মাস পরে মুনছুর আলী গাজী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক পদে অধিষ্ঠিত হন এবং গত ইউপি নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে বিএনপি প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা জোয়াদুর রসুলের কাছে পরাজিত হন। মুনছুর আলী গাজীর আওয়ামী লীগে যোগদান এবং আহবায়ক হওয়ায় চাঁদখালীর আওয়ামী লীগের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীরা দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তার ক্ষমতার অপব্যবহারে স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মী সহ সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ এমনটি বলছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ। চাঁদখালী বাজার সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের চরভরাটি জায়গা দখল করে পাঁকা ইমারত নির্মাণ করেছেন। বিগত জন্মাষ্টমীর দিন তার ইন্দনে চাঁদখালীর আওয়ামী লীগনেতা হারান চন্দ্র অধিকারীর বাড়ীতে কয়েক’শ লোক হামলা করে বাড়ী ভাংচুর করে। এ প্রসঙ্গে মুনছুর আলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে দাখিলকৃত অভিযোগে যাদের স্বাক্ষর রয়েছে তাদের অনেকেই বিষয়টি জানে না এই মর্মে পাল্টা লিখিত দিয়েছি। প্রতিপক্ষরা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা প্রচার করছে। লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন বিগত ইউপি নির্বাচনের কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগে যোগদান করে আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনিও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির পাইকগাছা শাখার কৃষ্ণপদ মন্ডল আওয়ামী লীগে এসে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য হয়েছেন। তাছাড়া আরো বেশ কয়েকজন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য হয়েছেন বলে জানাগেছে। সম্মেলনে অনুপ্রবেশকারী এ সকল ব্যক্তিদের কিভাবে মূল্যায়ন করা হবে এবং তাদের ভাগ্যে কি জুটবে সেটি দেখার অপেক্ষায় রয়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও রাড়–লী ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ গোলদার বলেন, সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত করলে কারো মনে কোন ক্ষোভ থাকবে না। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রশীদুজ্জামান বলেন, কেন্দ্র থেকে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে সম্মেলন করার নির্দেশনা রয়েছে। আর এটি গণতান্ত্রিক পন্থা। সম্মেলনে স্বচ্ছতার সহিত কমিটি গঠনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী বলেন, সম্মেলন কিভাবে হবে তা কেন্দ্রই নির্ধারণ করবে। এ প্রসঙ্গে আমার কোনো মন্তব্য নেই। দীর্ঘদিনপর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনে স্বচ্ছতার সহিত যোগ্য ব্যক্তিরা নির্বাচিত হবে এ আশায় আছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন