শেরপুরে ছাদ থেকে ঝাপ দিয়ে ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা

  10-12-2019 06:12PM

পিএনএস, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুরে মাদ্রাসার পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে ঝাপ দিয়ে তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। ওই ছাত্রীর নাম মোছা. জান্নাতি খাতুন (১২)। সে ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের জোরখালী মধ্যপাড়া গ্রামের মো. মিলন রহমানের মেয়ে।

গত সোমবার (০৯ডিসেম্বর) দিনগত রাত অনুমান সাড়ে ১২টার দিকে পৌরশহরের ধুনটমোড়স্থ শেখ হাফিজার প্লাজায় অবস্থিত হযরত ফাতেমা (রা:) বালিকা মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তার অবস্থা ‘চরম সঙ্কটাপন্ন’।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখনও তার জ্ঞান ফেরেনি। মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাতের কারণে ‘মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে’ মেয়েটি। তবে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা চালানোর কারণ জানা যায়নি।
পুলিশ ও মাদ্রাসা পরিচালনায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত ২০১৬সালে উপজেলার শাহ বন্দেগী ইউনিয়নের হামছায়াপুর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন ওই ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা ভাড়া নিয়ে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে তিনিসহ নিকট স্বজনদের নিয়ে কওমী ও আলীয়া মাদ্রাসার পৃথক সিলেবাস অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন। তাই চলতি বছরের গত ৩০নভেম্বর গার্মেন্টস্ কর্মী মিলন রহমান তার মেয়েকে ওই মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন। একইসঙ্গে মাদ্রাসার আবাসিক হোটেলে রাখেন। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপরও অনেকটা জোরপূর্বক তাকে মাদ্রাসার ওই বোর্ডিংয়ে রাখা হয়। এতে ক্ষোভ ও অভিমান করে ঘটনার রাতে মাদ্রাসা ভবনের পাঁচতলার ছাদ থেকে ঝাপ দিয়ে ছাত্রী জান্নাতি আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে তারা জানান। এদিকে অচেতন অবস্থায় ওই ছাত্রীকে ভবনের নিচে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন প্রথমে প্রথমে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাৎক্ষণিক তাকে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জ্ঞান ফেরেনি মেয়েটির।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অত্র মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সপ্তাহখানেক আগে মেয়েটি তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়। তাই কি-কারণে এবং কিভাবে যে এই ঘটনাটি ঘটলো তা বুঝতে পারছেন না বলে জানান। ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই ছাত্রীর বাবা মিলন রহমান কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি। শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের এ প্রসঙ্গে বলেন, ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ পাঠিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে এ বিষয়ে এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন