বোরহানউদ্দিনে মেঘনায় জাটকা ও মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব চলছে

  07-04-2020 08:22AM

পিএনএস ডেস্ক: করোনাভাইরাসে পুরো দেশ জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সারাদেশ চলছে সরকারের ঘোষিত লকডাউন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বানে প্রশাসন সকল নাগরিককে যখন সচেতন করায় ব্যস্ত। এমনই মৃহূর্তে ভোলার বোরহানউদ্দিনে মেঘনা নদীতে চলছে জাটকা ও মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব।

উপজেলার মির্জাকালু, সুলুইজ, দিদার মাঝি, আলিমুদ্দিনবাংলা বাজার ঘাটে এক শ্রেণির অসাধু মাছ ব‌্যবসাসীর প্রকাশ্যে চলছে জাটকা ও মা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিধন।

জানা যায়, ইলিশের অভয়াশ্রম হচ্ছে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী। মার্চ ও এপ্রিল মাসে মেঘনায় ৯০ কিলোমিটার ও তেতুলিয়াতে নদীতে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে সকল প্রকার জাল ফেলা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এই সময়ে জেলেদের কথা চিন্তা করে সরকার জেলে পরিবারকে সরকারি সাহায্য দিচ্ছে। উপজেলার নিবন্ধিত ১৭ হাজার ৯২৪ জন জেলেদের ভেতর থেকে ১০ হাজার ৪৫১টি জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি করে সরকারি চাল দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষ করে মির্ঝাকালু ঘাটের জাহাঙ্গীর মা‌ঝি, সুলুইজ ঘাটের শাফায়াত পাটোয়ারী, মাকসুদ মৃধা , আজম পাটোয়ারী, আলী মুদ্দিন বাংলা বাজারের জাহাঙ্গীর মাঝি নেতৃত্বে চলছে ঝাটকা ও মা ইলিশ শিকারের মহোৎসব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মির্জাকালু ঘাটের জেলেরা জানান, জাহাঙ্গীর মেম্বার স্থানীয়ভাবে অনেক প্রভাবশালী। সে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে। তারা আমাদের নদীতে যেতে বাধ্য করে থাকে। মাছ না ধরতে গেলে হুমকি ও দাদনের টাকার জন্য চাপ দেয়। আমরা অহন কি করুম ? এমনিক তে দেশে কি জানি ভাইরাস আইছে। তার পরও ঘরে থাকতে পরিনা দাদনের ট্যাহা পরিশোধ করতে মাছ ধরতে যাই। মাঝে মাঝে স্যাররা আইসা ধইরা নিয়া যায় জেল খাটি। যত মরা আমাগো। এ প্রতিবেদক সরেজমিন মির্জাকালু মাছ ঘাটে গেলে দেখা যায় প্রকাশ্যে মাছ ডাক দিয়ে বেচা বিক্রি করছে নুরনবী, ইউসুফ, নজরুল, আবদুলসহ একাধিক দালাল।

এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস অফিসার নাজমুল সালেহীন জানান- বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাস আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই সুযোগে অসাধু কিছু মৎসজীবী নদীতে মাছ ধরছে। আপনারা জানেন মার্চ ও এপ্রিল মাসে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষেধ। কিছু অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। যারা নদীতে দাদন দেয় তারা অত্যন্ত চতুর প্রকৃতির। আমরা কোন অভিযানে যাওয়ার আগে তাদের কাছে খবর পৌঁছে যায়।

‌‘আমাদের লোকবল অত্যন্ত কম। তারপরও আমরা নদীতে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে থাকি। গত ১৫ই মার্চ মেঘনায় অবৈধ বিন্দি জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাকালে জেলেরা আমাদের উপর হামলা করে এবং আমিসহ বেশ কয়জন পুলিশ আহত হই। তারপরও আমরা অভিযান চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেলেদের নদী‌তে এ দুই মাস মাছ না ধরার জন‌্য বৈঠক ক‌রে‌ছেন। তারপরও যদি কোন জেলে নদীতে গিয়ে মাছ ধরে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'

পিএনএস/হাফিজ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন