ঈদে অসহায়দের পাশে ‘মানবতার ঘর’

  24-05-2020 04:17PM

পিএনএস, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি : ঈদে দুস্থ ও অসহায় কর্মহীন মানুষের মাঝে দাঁড়িয়েছে ‘মানবতার ঘর’। করোনার প্রভাবে ঘরবন্দি মানুষ। কর্মহীন মানুষের আয়-রোজগারও তেমন নেই। বিপাকে পড়েছেন সমাজের নিম্নআয়ের মানুষেরা। এরিমধ্যে ঘরের দুয়ারে নাড়া দিচ্ছে খুশীর ঈদ।

একদিকে তিনবেলার খাওয়ার চিন্তা অন্যদিকে ঈদে । এ দুয়ে মিলে যখন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে জীবন চলছে তখন তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ‘মানবতার ঘর’।

ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ‘এই মনবতার ঘর’। এই ‘মনবতার ঘর’ প্রতিষ্ঠাতা সাইদুর রহমান। তিনি এলাকায় দানশীল ও সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত। তিনি মুণ্ডুমালা পৌর এলাকার সাদিপুর মাথলেপাড়া গ্রামের মৃত সাইনাল হকের ছেলে।

মু-ুমালা বাজারে নিজের দোতলা ভবনের একটি বড় হল রুমে খাদ্যসামগ্রী মজুদ করছেন। আর এর নাম দিয়েছেন মানবতার ঘর। এ মানবতার ঘর থেকেই এলাকার গরিব ও নিঃস্ব মানুষের মধ্যে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

ঈদের খুশি যেন অসহায়, কর্মহীন এবং হতদরিদ্র মানুষকে ম্লান করে না দেয়, সেজন্য সাইদুর নিয়েছেন ব্যাপক প্রস্তুতি। তানোর মুণ্ডুমালা পৌর এলাকার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার গরীব-দুখী ও অসহায়দের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করেছেন। এরমধ্যে ছিলো পোলাও চাল,চিনি,দুই রকমের সেমাই,তেল,সাবান ও পাপড়।

মু-ুমালা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে তেল, চিনি, লাচ্ছা সেমাই, গুড়ো দুধ, আতপ চাল, পাঞ্জাবি এবং নগদ একহাজার টাকা করে বিতরণ করেছেন সাইদুর। পাশাপাশি ঈদ উপহার হিসাবে মুণ্ডুমালা পৌর এলাকার ৭৫টি মসজিদের ১৫০ জন ইমাম এবং মুয়াজ্জিনকে পাঞ্জাবি ও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বাদ যাননি এলাকার সুধীজনও। ৫০জন সুধী ব্যক্তিকে একটি করে পাঞ্জাবি উপহার দেয়া হয়েছে।

এ মানবতার ঘরটিতে দিনরাত কাজ করছেন সাইদুরের অনুসারী শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী যুবক। বাজার থেকে এসব যুবকরা খাদ্যসামগ্রী কিনে আনছেন। খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, ময়দা, ডাল, আলু, তেল। এছাড়া এলাকার মানুষকে মহামারী করোনা থেকে রক্ষা করার জন্য বিতরণকৃত খাদ্যসামগ্রীর পাশাপাশি রয়েছে সাবান এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এসব দ্রব্য বাজার থেকে আনার পর ওই ঘরে করা হচ্ছে প্যাকেটজাত। এরপর তা এলাকার সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

সাইদুরের এ মানবতার ঘরের অন্যতম সহযোগী মমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাইদুর রহমান পেশায় মৎসচাষী এবং প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। মধ্য মার্চ থেকে সাইদুর রহমানের অর্থায়নে এ পর্যন্ত আমরা পাঁচ হাজার অসহায় গরিব মানুষের কাছে কয়েক দফা খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। এসব মানুষের মধ্যে আদিবাসীরাও রয়েছেন। মানুষকে সহায়তা করার জন্য আমাদের শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন। এলাকার মানুষ যেন খাবারের কষ্টে না থাকেন সে ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এছাড়া তিনি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের অসহায় এবং দরিদ্র ব্যক্তিদের জন্য মেয়র এএইচএম খাইরুজ্জামান লিটনের হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন।

এ নিয়ে সাইদুর রহমান বলেন, এলাকার গরিব মানুষ কাজ না থাকার কারণে সমস্যায় রয়েছেন। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সকলের উচিত। এ বিবেচনাতেই আমি তাদের সহযোগিতা করেছি। আমি অতীতেও অসহায় গরিব মানুষের পাশে ছিলাম, আগামীতেও থাকব। আমি এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখ আর বিপদের সাথী হিসেবেই আমরণ থাকতে চাই।

তানোর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং মুণ্ডুমালা পৌরসভার মেয়র গোলাম রাব্বানী বলেন, সাইদুর রহমানের মানবতার ঘর সমাজের অসহায় জনগোষ্ঠীর জন্য আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করছে। ব্যক্তি উদ্যোগে কর্মহীন অসহায় মানুষকে দান ও সহযোগিতা তাকে অনন্য উচ্চতা দান করেছে। আমাদের এ দুঃসময়ে তার মতো মানুষের বড় প্রয়োজন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন