রাজনগরে মহিলা ইউপি সদস্যকে চেয়ার থেকে লাতি মেরে ফেলে দিলেন চেয়ারম্যান

  24-05-2020 05:16PM

পিএনএস ডেস্ক : মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মনসুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত এর হাতে একই ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য সুফিয়া বেগম (৭, ৮ ও ৯) লাঞ্চিত হয়েছেন। এঘটনায় উপজেলা জুড়ে তোলপাড় চলছে। মহিলা ইউপি সদস্য সুফিয়া বেগম বলছেন চেয়ারম্যান তাকে লাতি মেরে চেয়ার থেকে ফেলে দিয়েছেন। এঘটনায় তিনি রাজনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন পরিষদের অন্যান্য সদস্য ও এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে চেয়ারম্যানের সাথে জেলা আ’লীগ নেতৃবৃন্দের গভীর সখ্যতা থাকায় অনেকটা বেপরোয়া হয়েয়ে উঠেছেন তিনি। তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।
মহিলা ইউপি সদস্য সুফিয়া বেগম বলেন, শনিবার দুপুরে ইউনিয়ন অফিসে বসে আমি মাষ্টার রোলের নাম লিখছিলাম। তখন চেয়ারম্যান এসে আমার কাছে জানতে চাইলেন কি করতেছি। মাষ্টার রোলের নাম লিখতেছি বলার সাথে সাথে লাতি মেরে আমাকে চেয়ার থেকে ফেলেদেন। এসময় সামনে একজন শিক্ষা অফিসার ও অন্যান্য লোক উপস্থিত ছিলেন। তখন পাশে অন্যান্য পুরুষ/মহিলা ইউপি সদস্যরা চাল বিতরণ করছিলেন। সেখানে গিয়ে চেয়ারম্যান তাদের জিজ্ঞাসা করেন কার চাল বিতরণ চলছে। আমার চাল বিতরণ চলছে শোনার সাথে সাথে তিনি অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করেন। বিষয়টি জেনে মহিলা ইউপি সদস্য সুফিয়া বেগমের ছেলে আলমঙ্গীর ইউনিয়নে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। মহিলা ইউপি সদস্যের অভিযোগ, ইউনিয়নের চৌকিদার ছাদেক এবং চেয়ারম্যানের লোক তরকিছ তাকে মারধর করে। খবর পেয়ে রাজনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

নাম গোপন রাখার শর্তে অপর এক ইউপি সদস্য বলেন, নির্বাচনের পর থেকেই চেয়ারম্যান তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে আসছেন। তিনি কোনো বিষয়ে তাদের কথা বলতে দেননি বা তাদের পরামর্শ নেননি। সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণের ক্ষেত্রেও তিনি স্বৈরচারি মনোভাবে ইউনিয়ন পরিচালনা করছেন।

রাজনগর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মনসুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সুফিয়া বেগমের এলাকার একজন আমেরিকা প্রবাসীর সাথে তার পূর্বশত্রুতা ছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য একাধিকবার এলাকার গন্যমান্য লোককে দায়িত্ব দিলেও সে তাদের অসম্মান করে। পরবর্তীতে বিষয়টি আমিও চেষ্টা করে সমাধান করতে পারিনি। এ থেকে ওই মহিলা ইউপি সদস্য আমার উপর খেপে যায়। ঘটনার দিন অফিসে বসে আমি তালিকা করছিলাম এবং আমার পাশে বসে ওই মহিলা ইউপি সদস্যও তালিকা করছিলেন। হঠাৎ করে সে ও তারা লোকজন আমার উপর আক্রমন করে। তখন স্থানীয়রা ওই মহিলাকে কিছু মারধর করে ও আমাকে রক্ষা করে। পূর্বশত্রুতার জেরে তারা আমাকে মারধর করার জন্য পরিকল্পনা করে আসছিল। চেয়ারম্যান বলেন, তার বিরুদ্ধে এলাকায় চুরি ও ঘুষ গ্রহণের অনেক অভিযোগ রয়েছে।

রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাশেম বলেন, রাজনগর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মনসুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসীরা তার উপর হামলা করে চেক ও টাকা নিয়ে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি ফোর্স পাঠানোর জন্য। সাথে সাথে ঘটনাস্থলে ফোর্স গিয়ে জানতে পায় মহিলা ইউপি সদস্যকে না কি চেয়ারম্যানের লোকেরা মারধর করছেন। তবে এবিষয়ে মহিলা ইউপি সদস্য একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এবিষয়ে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিয়াংকা পাল বলেন, বিষয়টি আমি থার্ট পার্সনের কাছ থেকে অবগত হয়েছি। পরিষদের কেউ লিখিত অথবা মৌখিকভাবে জানায়নি। অফিসিয়ালভাবে জানালে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন