বেলাবতে করোনায় আক্রান্ত কম হলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি

  29-06-2020 07:50PM

পিএনএস, নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বা শনাক্তের হার জেলার অন্যান্য উপজেলার চেয়ে কম হলেও করোনায় মৃত্যুর হার অন্যান্য উপজেলা থেকে বেশি। নমুনা সংগ্রহে ধীরগতি ও সাধারণ মানুষের নমুনা দিতে অনাগ্রহের কারণে এ উপজেলায় আক্রান্তের হার কম বলে মনে করেন অনেকে। করোনায় আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার বেশি হবার কারণ হিসেবে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে করোনায় যারা মৃত্যুবরণ করছেন তারা সকলেই বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ জুন পর্যন্ত নরসিংদী জেলায় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা এক হাজার তিন শত ৩৯ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৮৬৪ জন, শিবপুরে ১২৫ জন, পলাশে ১১২ জন, মনোহরদীতে ৭২ জন, রায়পুরায় ৯৫ ও বেলাবতে ৭১ জন। জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন মোট ২৯ জন। এর মধ্যে নরসিংদী সদরে ১৮ জন, পলাশে ০১ জন, বেলাবতে ০৪ জন, রায়পুরায় ০৩ জন, মনোহরদীতে ০২ জন ও শিবপুরে ০১ জন। উক্ত তথ্যমতে নরসিংদী সদর উপজেলা ছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলার তুলনায় বেলাব উপজেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কম হলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে এ পর্যন্ত বেলাব উপজেলায় মোট ৪১৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাপ্ত ফলে ৭১ জনের নমুনা পজিটিভ এসেছে। ৭১ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৪৬ জন সুস্থ হয়েছেন এবং অবশিষ্ট ২১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বেলাব উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বেলাব উপজেলার মোট জনসংখ্যা এক লক্ষ নব্বই হাজার ছিয়াশি জন। এর মধ্যে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে মাত্র ৪১৮ জনের। এরমধ্যে ৭১ জনের পজিটিভ ধরা পড়েছে। ৭১ জনের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ জন। পরিসংখ্যান মতে এই উপজেলার মোট জনসংখ্যার প্রায় ০.২২% মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহিত নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ এর হার ১৬.৯৮%, মৃত্যুর হার প্রায় ৫.৬৩%। তথ্য অনুযায়ী জনসংখ্যার তুলনায় নমুনা সংগ্রহের হার খুবই কম। জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে বেলাবতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম হলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। সচেতন মহলের আশংকা নমুনা পরীক্ষার হার বাড়ানো হলে বেলাবতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সামাজিক ভাবে মানুষ আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্য চোখে দেখেন। অনেক ক্ষেত্রে সমাজচ্যুত হবার মত ঘটনা ঘটতে পারে এমন ভয়ে অনেকে নমুনা প্রদান করেন না। ফলে বেশির ভাগ মানুষ করোনার উপসর্গ গোপন করে হাট বাজারসহ লোকালয়ে যাতায়াত করেন। অসচেতন অনেকে করোনা ভাইরাসের ব্যাপারটিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় নমুনা প্রদানের সংখ্যা কম। এক্ষেত্রে করোনার লক্ষণ দেখা দিলেও বেশিরভাগ মানুষই তথ্য গোপন সহ নমুনা প্রদান করেন না।

বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, মানুষ যথেষ্ট সচেতন বলেই নিজ ইচ্ছায় নমুনা দিয়ে যায়। তবে বেলাবতে আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যু বেশি হবার কারণ যারা করোনায় মারা গেছেন তারা সবাই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন