কুলাউড়ায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যা, শাশুড়ি-দেবর গ্রেপ্তার

  04-07-2020 04:26PM

পিএনএস ডেস্ক : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পারিবারিক কলহের জের ধরে মাজেদা বেগম (২১) নামের সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত মাজেদা উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাবই গ্রামের আব্দুল মুকিতের স্ত্রী। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নিহত গৃহবধূর মাতা কবিরুন নেছা গৃহবধূর স্বামী-শাশুড়িসহ ৮ জনকে আসামি করে শুক্রবার একটি কুলাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় গৃহবধূর শাশুড়ি, দেবরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহার, পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে একই উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাবই গ্রামের মো. হাছলু মিয়ার ছেলে আব্দুল মুকিদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকসহ বিভিন্ন কারণে শাশুড়ি, ননদসহ শশুরবাড়ির লোকজন গৃহবধূকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। ৪-৫ মাস পূর্বে মাজেদার ননদ হেপী বেগমের বিয়ের জন্য শশুরবাড়ির লোকজন মোটা অংকের টাকা দাবি করে। পরিবারের সাথে কথা বলে এ অবস্থায় ননদের বিয়েতে টাকা ও যৌতুকের টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে মাজেদা জানান। এরপর বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে ঘরের ভিতর মাজেদাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে গলায় শ্বাসরোধের মাধ্যমে হত্যা করে শশুর বাড়ির লোকজন।

মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে মাজেদার মা ও স্বজনরা লাশের গলায় এবং শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। বিষয়টি তাঁরা পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাজেদার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাজেদার শাশুড়ি আফিয়া বেগম (৫০), দেবর মোস্তাক আহমদ (২০), জায়েদ আহমদ (২৩) ও আত্মীয় আব্দুল জলিলকে (৩২) আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে নিহত মাজেদার স্বামী আব্দুল মুকিতের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার এসআই কানাই লাল চক্রবর্তী বলেন, নিহত মাজেদার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর মাতা বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামি মামলা করেছেন। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে আটক করে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিরা পলাতক রয়েছে তবে তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন