পীরগাছায় তিস্তার বন্যায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত

  11-07-2020 07:13PM

পিএনএস ডেস্ক : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণের ফলে রংপুরের পীরগাছায় তৃতীয় দফায় তিস্তা নদীর পানি আবারো দ্রুতগতিতে বাড়ছে। শনিবার দুপুর ৩টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলায় তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল থেকে কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের নেমে আসা ঢল ও বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা রয়েছে।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছাওলা ইউনিয়নের গাবুড়া, জুয়ান, রামশিং, শিবদেব ও হাগুরিয়া হাশিম গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদীতে রয়েছে তীব্র স্রোত। স্রোতে ভাঙছে পাড়, জমি ও বসতবাড়ি। অনেকে শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর চেষ্টা করছে। বন্যা ও ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃস্ব পরিবারগুলোর অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে।

চলতি মাসে নদী তীরবর্তী উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের হাগুরিয়া হাশিম গ্রামের প্রায় শতাধিক বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। এ ছাড়া পাশের নাউয়া পাড়া এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে যেকোনো মুহূর্তে আরো প্রায় দুই শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত তিন বছরে দক্ষিণ গাবুড়াসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের পাকা মসজিদ, হাটবাজার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য স্থাপনাও নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। শত শত একর আবাদি জমি চলে গেছে নদী গর্ভে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বারবার আবেদন নিবেদন করা হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিবছর তারা তিস্তার ভাঙনের শিকার হচ্ছেন।

হাগুরিয়া হাশিম গ্রামের রুপিয়া বেগম জানান, বন্যার পানি কমা বাড়ার কারণে ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাগুরিয়া হাশিম গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের শিকার নবাব উদ্দিন বলেন, ভাঙন এতো তীব্র যে ঘরবাড়ি সরানোর সময় পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারিভাবেও কোনো সহযোগিতা মিলছে না। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো বর্তমানে চরম বিপাকে পড়েছে।

শিবদেব চরের কৃষক আতিয়ার রহমান জানান, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। শনিবার সকাল থেকে পানি প্রবাহ বেড়েই চলছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, তিস্তায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর তালিকা তৈরির কাজ চলছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান বলেন, তিস্তায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে নদী তীরবর্তী এলাকা তলিয়ে গেছে। তবে দুদিনের মধ্যে পানি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পিএনএস/এসআইআর

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন