বিপদসীমার ৫৫ সে.মি. উপরে তিস্তার পানি, ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা

  13-07-2020 03:33AM

পিএনএস ডেস্ক : ভারতীয় উজান এলাকা থেকে নেমে আসা পানির ঢলে তিস্তা ব্যারেজ ও আশপাশের চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে তিস্তা অববাহিকায় রেড এলার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘোষণা দেয় ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম।

তিনি জানান, ভারতের উজনা থেকে ধেয়ে আসা পানি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ব্যারেজ রক্ষার্থে ফ্লাড বাইপাস যে কোনো সময় কেটে দেওয়া হতে পারে। এ জন্যই তিস্তা অববাহিকায় সর্বেোচ্চ সতর্কতায় রেড এলার্ট জারি করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে লালমনিরহাটে তিস্তার ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার, ধরলা নদী কুলাঘাট পয়েন্ট বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ক্রমেই পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে পানি উন্নয় বোর্ডের লালমনিহাটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মহিবুল হক জানান, ক্রমেই ধেয়ে আসছে পানি। ফলে তিস্তা ধরলা ফুলে ফেপে উঠে লোকালয়ে প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ছে। হুমকির মুখে পড়েছে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কটিও। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার অন্তত ৬০ হাজার মানুষ। ৪র্থ দফা বন্যার কারণে এসব এলাকায় দেখা দিয়ে চরম খাদ্য সংকট, বিশুদ্ধ পানির অভাবে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগ ব্যাধী।

তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্ধুর্ণা, গড্ডিমারী, ডাউয়াবাড়ি এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজারের অধিক মানুষ আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে এসব এলাকার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে বহু কাঁচা-পাকা সড়কে পানি উঠে পড়ায়।

এছাড়া তিস্তা-ধরলার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্ট বন্যায় চরাঞ্চলের সবজি, বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। অনেক মৎস খামারের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ফসলের ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানীর শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, ত্রাণ পর্যাপ্ত থাকায় প্রতিদিনেই ত্রাণ দেয়া অব্যাহত আছে। আমরা এই বিষয়ে তৎপর আছি। এ জেলার বানভাসি মানুষের পাশে আছি। আমরা তাদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন