নরসিংদীতে কোরবানির পশুর হাটে নেই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা

  14-07-2020 06:22PM

পিএনএস, নরসিংদী প্রতিনিধি : কোরবানির ঈদকে ঘিরে এখনও অস্থায়ী পশুর হাট না বসলেও জমতে শুরু করেছে নরসিংদী জেলার স্থায়ী পশুর হাটগুলো। করোনা সংক্রমণ এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাটে কেনাবেচার নির্দেশনা দিলেও কোন হাটেই তার তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। ক্রেতা-বিক্রেতারা করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশংকা করলেও মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। করোনা সংক্রমণ এড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এ বছর অস্থায়ী পশুর হাটকে নিরুৎসাহিত করে পশু বেচাকেনায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আসন্ন কোরবানির ঈদকে ঘিরে জমতে শুরু করেছে নরসিংদী জেলার পশুর হাটগুলো। পুরোদমে বেচাকেনা শুরু না হওয়ায় অস্থায়ী পশুর হাটগুলো এখনও জমে না উঠলেও জমে উঠেছে স্থায়ী পশুর হাটের বেচাকেনা। এ বছর জেলার পশুর হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কেনাবেচার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ঈদের দিন ঘনিয়ে আসায় এসব হাটে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা। পুরোদমে বেচাকেনা শুরু না হলেও গত শনিবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারী ক্রেতা বিক্রেতার পাশাপাশি স্থানীয় ক্রেতা বিক্রেতার সমাগম হয় পশুর বৃহৎ হাট নরসিংদীর শিবপুরের পুটিয়া বাজারে। করোনার সংক্রমণ এড়াতে পশুর হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কেনাবেচার নির্দেশনা থাকলেও পুটিয়া পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব না মেনেই চলছে কেনাবেচা। ক্রেতা বিক্রেতাদের অনেকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি সম্পর্কে জানলেও মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। অনেকেই স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা জেনেও পরিধান করেন না মাস্ক। কারও কারও মুখে মাস্ক দেখা গেলেও তা ঝুলছে থুতনিতে। হাটের ইজারাদার কর্তৃক হাটে প্রবেশের আগে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হলেও অনেকেই তা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। হাটের ভেতরে দূরত্ব বজায় না রেখে ঘেষাঘেষি করেই চলছে পশু বেচাকেনার কাজ। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলায় করোনা সংক্রমণ ঝুঁকিতে সচেতন অনেক মানুষ হাটে প্রবেশ করতে চাইছেন না। পশুর হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা থাকলেও কেউ এসবের তোয়াক্কা করছেন না।

গরু কিনতে আসা প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ওরফে আলতাফ আলী বলেন, আমি মাস্ক পড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরুর বাজার দর দেখতে এসেছি। কিন্তু এখানে স্বাস্থ্যবিধি অনেকেই মানছেন না, করোনা নিয়ে কারও ভয়ভীতি নেই। পশুর হাটে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাবে। পুটিয়া বাজারে গরু বিক্রি করতে আসা মোমেন খান বেপারী বলেন, মাস্ক পরিধানের ইচ্ছে থাকলেও গরু বাজারের ভেতরে এসব নিয়ম মেনে চলা কঠিন কাজ। মানুষের ভিড়, বৃষ্টিবাদল, পশুর যত্ন নেয়াসহ অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। করোনার ঝুঁকি জেনেও আমরা সব সময় স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারি না। ছাগল বিক্রি করতে আসা কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, করোনার কথা জানলেও বেশির ভাগই মানুষইতো নিয়ম মানে না, মাস্ক পড়ে না। আমি একা পড়লে আর কী হবে? পুটিয়া পশুর হাটের ইজারাদার জহিরুল ইসলাম শরীফ বলেন, করোনার ঝুঁকি সম্পর্কে হাটে আসা ক্রেতা বিক্রেতাদের সচেতন করতে মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া করোনা সংক্রমণ এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য হাটে প্রবেশের সময় ক্রেতা বিক্রেতাদের হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করাসহ বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বলেন, করোনা সংক্রমণ এড়াতে প্রায় প্রতিদিনই নির্বাহী মাজিষ্ট্র্যেটসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতা বৃদ্ধি ও তদারকি অব্যাহত রয়েছে। পশুর হাট গুলোতে মানুষের উপর চাপ প্রয়োগ করে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে বাধ্য করা যায় না, যদি তারা নিজেরা সচেতন না হন। এ বছর করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির কারণে অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমতি সীমিত পরিসরে দেয়ার কথা জানিয়ে পশু বেচাকেনায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

পিএনএস/এসআইআর


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন