১০ বছর ধরে জাল সনদে শিক্ষকতা, অতঃপর...

  05-08-2020 06:01PM

পিএনএস ডেস্ক: সনদ জালিয়াতির অভিযোগে রংপুরের বদরগঞ্জ সরকারি কলেজের বাংলা অনার্স বিভাগের প্রভাষক নিরঞ্জন কুমার রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে বদরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আরিফ আলী বলেন, একজন শিক্ষকের সনদ জালিয়াতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। সঠিকভাবে তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ উঠেছে, প্রায় ১০ বছর ধরে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার জাল সনদপত্র দাখিল করে চাকরি করে আসছেন। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসি) নির্দেশে গত ২৭ জুলাই বদরগঞ্জ থানায় তার বিরুদ্ধে জাল সনদ দিয়ে চাকরি নেওয়ার প্রমান পাওয়া গেলে মামলা দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিরঞ্জন কুমার রায় বিগত ২০১১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বদরগঞ্জ কলেজে বাংলা অনার্স বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। ওই নিয়োগ পরীক্ষায় তিনি অন্যান্য শিক্ষা সনদের সঙ্গে শিক্ষক নিবন্ধনের একটি সনদপত্র দাখিল করেন। ২০০৭ সালে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ৭২০১০১৩৫, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৭০১১৮১৮ উল্লেখ করা হয়। নিরঞ্জন রায় রোল ও রেজিস্ট্রেশন ব্যবহার করে একটি হুবহু জাল সনদ তৈরি করে নিয়োগ নেন।

এদিকে আসল শিক্ষা সনদপত্রটি সঠিক কিনা তা যাছাইয়ের জন্য গত বছরের ১০ এপ্রিল অপর একটি প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে বলা হয় তাকে। নিরঞ্জন কুমার রায় মিলন আবারো এনটিআরসির সহকারী পরিচালক মোস্তাক আহমেদ এর স্বাক্ষর জাল করে নকল সনদপত্রটি সঠিক বলে প্রত্যয়নপত্র দাখিল করেন। পরে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি দুইট ভূয়া সনদ তৈরি করে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছেন।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ৩০২ বেসরকারি কলেজকে জাতীয়করণ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসিচব মইনুল হাসান শুধুমাত্র শিক্ষক নিবন্ধনধারী প্রভাষকদের সনদপত্র সঠিক কিনা তা যাছাই করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কলেজের অধ্যক্ষদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে নিজ নিজ কলেজ থেকে শিক্ষক নিবন্ধনধারি শিক্ষকদের সনদপত্র এনটিআরসিএ দপ্তরে পাঠানো হয়। এতে নিরঞ্জন কুমার রায়ের দাখিল করা সনদপত্রটি জাল ও ভুয়া বলে অভিযোগ ওঠে।

পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সনদটি এনটিআরসি দপ্তরে পাঠানো হলে সনদটি অধিকতরভাবে যাছাই শেষে দেখা যায় এটি জাল ও ভুয়া। এতে যে রোল ও রেজিস্ট্রেশন ব্যবহার করা হয়েছে তা অন্য একজন প্রার্থীর। ওই রোলধারীর নাম ফেরদৌসি বেগম, পিতা মরহুম মোহাম্মদ নুরুল হুদা, মাতা লুৎফা বেগম। গত ২২ জুলাই এনটিআরসির সহকারি পরিচালক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে জানা যায়, নিরঞ্জন কুমার রায়ের শিক্ষা নিবন্ধনের সনদপত্র জাল।

জাল সনদধারী ব্যক্তির (নিরঞ্জন) বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করার জন্য বদরগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষকে অনুরোধ করা হয়। পরে বদরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মু. মাজেদ আলী খান প্রভাষক নিরঞ্জন কুমার রায় ওরফে মিলনের বিরুদ্ধে বদরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক নিরঞ্জন কুমার রায় বলেন, যে সময় আমি নিয়োগ নিয়েছি (২০১১) সে সময় শিক্ষক নিবন্ধন সনদপত্রের প্রয়োজন ছিল না।

ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন