পিএনএস ডেস্ক : কুড়িগ্রামে বন্যার পানি নেমে গেছে এবং বানভাসীরা ইতিমধ্যেই আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরেছেন। অনেকে তাদের ঘরবাড়ি মেরামত করছেন প্রায় এক সপ্তাহ যাবত। কিন্তু এখনও তা পুরোপুরি মেরামত করে উঠতে পারেননি। বন্যার পানি শুকিয়ে গেলেও এখনও তাদের অনেকের শুকায়নি বন্যার ক্ষত। এবারের তিন দফা বন্যায় মারাত্মক বিপর্যয়ে পড়েছেন জেলার ৯ উপজেলার লক্ষাধিক কৃষক।
কৃষিবিভাগের উপপরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান জানান, পরপর কয়েক দফা বন্যায় লক্ষাধিক কৃষকের বিভিন্ন শাক সবজি, পাট, রোপা আমন বীজ ও ভূট্টাসহ ১৮ হাজার হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়। সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায় ১১ হাজার ৬২২ হেক্টর জমির ফসল। উৎপাদনের ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৯৬৩ মেট্রিক টন। যার মুল্য দাঁড়ায় ১৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সেই অনুযায়ী কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার কথা বলা হলেও তা এখনও শুরু না হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর ইসলাম জানান, তিন বারের বন্যায় আমার ইউনিয়নের সমস্ত ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কৃষি বিভাগের কোন খবর নেই। অন্যান্য বছর নাড়াচাড়া থাকলেও এবার নেই। অথচ ক্ষতি হয়েছে এবার অনেক বোশ। কৃষকরা বীজ-চারার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যাদের সামর্থ্য আছে বাইরের জেলা থেকে এনে জমিতে লাগাচ্ছে।
অপরদিকে, গত কয়েকদিন যাবত নদনদীর পানি কমার সাথে সাথে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন এসব মানুষ বন্যাকে কয়েক দফা মোকাবিলা করে এখন নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
ধরলা নদীর পাড়ে রহিমা বেগম জানান, ঘর বাড়ি বানের পানিত ভাঙি পড়চে। এল্যা ক্যামন করি ভাল করিম বা। টেকা নাই পইসা নাই ক্যামন করি কি করি খাই না থাকি। সাহেবের আলগা ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিক আলী মন্ডল জানান, বন্যায় যে পরিমাণ ত্রাণ পাওয়া গেছে তা দিয়ে সব দুর্গত পরিবারে সহায়তা করা সম্ভব হয়নি। আরও বরাদ্দ পেলে হয়তো তাদের সহায়তা করা যেত।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, নদনদীর পানি কমে গিয়ে জেলার ১৯টি পয়েন্টে নদী ভাঙন দেখা দেয়। তবে আমরা দ্রুত ওই পয়েন্টগুলোতে বালুর বস্তা ফেলে নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। কিন্তু আবার গতকাল থেকে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ওই ভাঙন স্থির রয়েছে বলে জানান তিনি।
পিএনএস/এসআইআর
কুড়িগ্রামে পানি নামলেও শুকায়নি বন্যার ক্ষত
12-08-2020 08:41PM