অন্তরঙ্গ মুহূর্ত দেখে ফেলায় সালিসে জুতাপেটা, অপমানে শিশুর আত্মহত্যা!

  02-03-2021 08:50PM

পিএনএস ডেস্ক : টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় হাসি আক্তার নামে ১০ বছরের এক শিশু গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পারিবারিক সালিসে মারপিট করায় অপমান সইতে না পেরে নানার ভাড়া ঘরে ওই শিশু আত্মহত্যা করে বলে জানা যায়। গত রোববার রাতে উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকার জালাল খানের ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী জানায়, ঠাকুরগাঁও জেলার রানী শংকৈল উপজেলা সদরের মো. হাসেম আলী দীর্ঘদিন ধরে মির্জাপুর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের জালাল খানের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। হাসেম ছাড়াও তার শ্বশুর আব্দুল হাকিম ও ভায়রা তারিকুল ইসলামও একই বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তারা সকলেই দিনমজুরের কাজ করেন। একই বাসার ভাড়াটিয়া মাসুম মিয়া (২০) নামের এক যুবকের সঙ্গে হাসির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত রোববার রাতে হাসি ও মাসুমের অন্তরঙ্গের বিষয়টি হাসির খালু তারিকুল দেখে ফেলেন।

ওই রাতেই পারিবারিকভাবে সালিস হয়। ওই সালিসে হাসিকে মারধর করে মাসুমকে সতর্ক করা হয় বলে স্থানীয়রা জানান। পরে হাসিকে নানার ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে হাসি ঘরের ভেতর গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।



খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা পুলিশ গতকাল সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।

এদিকে, পুলিশ এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে হাসির প্রেমিক মাসুমের খোঁজ করেন। তাকে না পেয়ে স্থানীয়দের অনুরোধে হাসির খালু তারিকুল ইসলাম ও মাসুমের বন্ধু হাসান মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের গাড়িতে উঠিয়ে থানার উদ্দেশে রওনা করে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দেওহাটা আন্ডারপাস অতিক্রম করার পর হাসান পালানোর উদ্দেশে পুলিশের গাড়ি থেকে লাফ দেয়। এতে গুরুতর আহত হয় হাসান। তাকে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. একরামুলের পাহারায় তার চিকিৎসা চলছে বলে জানা গেছে। হাসান রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার গোপিডাঙ্গা গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে। সোমবার হাসির বাবা বাদী হয়ে মাসুমকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা করেছেন।

মুঠোফোনে হাসির বাবা আবুল হাসেমের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে বিরক্ত করেন না।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. একরামুল হক বলেন, ‘প্রেমিক মাসুম পালিয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর অনুরোধে বন্ধু হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওসি স্যারের কাছে নিয়ে আসছিলাম। পথিমধ্যে দেওহাটা এলাকায় আসার পর পালানোর উদ্দেশে গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে আহত হয়। ঢাকায় তার চিকিৎসা চলছে। এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে।’

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন