প্রেম করে বিয়ের পর পরকীয়ায় আসক্ত স্বামী, যৌতুকের জন্যও নির্যাতন!

  10-05-2021 09:20PM

পিএনএস ডেস্ক : বগুড়ার শেরপুরে স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়া ও যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে বিয়ের আঠারো মাসের মাথায় ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন এক গৃহবধূ। তাঁর নাম মোছা. শিলা আক্তার। তিনি উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের পারভবানীপুর পূর্বপাড়া গ্রামের সোহেল রানা ওরফে বাবুর স্ত্রী। যৌতুকলোভী পাষাণ্ড স্বামী ও তার পরিবারের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বর্তমানে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন ওই গৃহবধূ। এ ঘটনায় সোমবার (১০মে) শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের চকপোতা গ্রামের শাহজাহান আলীর কলেজ পড়ুয়া মেয়ে শিলা আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার পারভবানীপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে সোহেল রানার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে উভয়ের পরিবারের সম্মতিতে বিগত ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয় তাঁদের। এরপর বেশকিছুদিন সুখে শান্তিতে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। একপর্যায়ে স্থানীয় খারাপ প্রকৃতির লোকজনের সঙ্গে মিশে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন স্বামী সোহেল রানা। এমনকি অসামাজিক কার্যকলাপ ও নিয়মিত পতিতালয়ে যাওয়া আসা শুরু করেন। বিশেষ করে গাড়িদহ বাজারস্থ বাড়ির এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে যান তিনি। এসব বিষয় জানতে পেরে স্ত্রী শিলা আক্তার নানাভাবে এহেন কর্মকাণ্ডে বাধার সৃষ্টি করেন। সেইসঙ্গে স্বামীকে ভালো পথে নিয়ে আসার সব রকম চেষ্টা করেন। কিন্তু স্ত্রীর এসব কাজে তাঁর স্বামী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে শারিরীক ও মানুসিক নির্যাতন চালানো শুরু করেন। পাশাপাশি ব্যবসার জন্য যৌতুক হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করে বসেন। এর মধ্যে এক লাখ টাকা পরিশোধও করা হয়। এরপরও পাষাণ্ড স্বামীর মন গলেনি। বরং যৌতুকের টাকার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। এরই ধারাবাহিকতায় স্ত্রীর শিলার ওপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়। একপর্যায়ে যৌতুকলোভী স্বামী ও তার পরিবারের অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি চলে আসতে বাধ্য হন শিলা আক্তার। বেশ কয়েকমাস অতিবাহিত হলেও তাকে ভরণপোষণ ও খোঁজখবর না নেওয়ায় দরিদ্র বাবার বাড়িতে শিলা আক্তার চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে, এসব অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে শিলার স্বামী মো. সোহেল রানা ওরফে বাবু বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে স্ত্রী শিলা আক্তার তার বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন। তিনি কোনো পরকীয়া বা মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত নেই। এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। তাকে ফাঁসানো ও অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়ার জন্যই থানা পুলিশের কাছে এই অভিযোগ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান রহমান বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন