বয়সটাকে বেঁধে রাখুন হাতের মুঠোয়

  29-03-2019 04:36PM

পিএনএস ডেস্ক : বয়সটা কি একটু বেড়েই যাচ্ছে? চেহারায় কি বয়সের ছাপ পড়েই যাচ্ছে? চোখেমুখে তারুণ্য কি হারিয়েই যাচ্ছে? জীবনের একটা পর্বে সবার মনেই এমন প্রশ্ন জাগে। গুণে গুণে খেয়াল করলে দেখা যায়- ঠিকই তো! বয়সটাও তো ৩০-৩৫ এর কোটা পেরিয়েই গেল। এখন উপায়? মন তো চায় না বুড়িয়ে যেতে। মন তো চিরসবুজ চিরতরুণী থাকতে চায়।

মন যদি তা-ই চায় তবে নো টেনশন। কারণ আপনার মনই আপনার যৌবন ধরে রাখতে বড় ভূমিকা পালন করবে। তবে আপনার স্বাস্থ্য ও মানসিক প্রশান্তির পেছনে অবশ্যই কিছু কার্যকরী ও ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আর ছোট্ট এই অভ্যাসগুলোকে মেনে আপনিও বয়সকে ধোঁকা দিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক বেশি তরুণ থাকতে পারেন।

এ নিয়ে মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালের একদল গবেষক তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন, কীভাবে নারীরা মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার পাশাপাশি যৌবন ধরে রাখতে পারেন বহু বছর:

পরিবর্তনকে মেনে নিন: জীবনের একেকটি সময় আপনার মতাদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যেতেই পারে। তবে একটু ভেবে দেখলেই বুঝতে পারবেন যে, ব্যাপারগুলো আসলে একইরকম। আপনার চারপাশ ও চারপাশের ঘটনা যে খুব বেশি বদলে যাচ্ছে তা নয়। হয়তো আগে যে অবস্থানে আপনার বাবা কিংবা মা ছিলেন, এখন আপনি সেই অবস্থানে আছেন। এই পরিবর্তন নিয়ে খুব বেশি মাথা না ঘামিয়ে সেটাকে স্বাগতম জানান। এতে করে আপনি যেমন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন, তেমনি মানসিকভাবেও সুস্থ থাকবেন।

স্বাস্থ্যসম্মত খাবার: নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করাটা শুনতে খুব কষ্টকর একটি ব্যাপার মনে হতেই পারে। তবে একবার শুরু করলে পরবর্তীতে আপনি এই অভ্যাসটির উপকারিতা অনুভব করতে পারবেন। বিশেষ করে, নারীদের ক্ষেত্রে হৃদরোগ ও অস্টিওপেরোসিসের মতো সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়। নিয়মিত একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চললে এই সমস্যাগুলো থেকে দূরে থাকা সম্ভব। এছাড়া, দীর্ঘস্থায়ী একটি সুস্থ শরীর পেতেও এই অভ্যাসগুলো সাহায্য করবে আপনাকে।

পারস্পরিক হৃদ্যতা ও ভালোবাসা: জীবনে নানারকম খারাপ সময় আসবে। এই সময়গুলোতে ভেঙে না পড়ে নিজেকে সাহায্য করুন। যদিও খুব খারাপ কোনো সময়কে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তবে চেষ্টা করুন, এই সময়ে নিজের খারাপ লাগা বা ভালো লাগার সাথে খুব বেশি লড়াই না করতে। তাতে করে আখেরে ভালো হবে আপনারই।

নারীদের মধ্যে পুরুষদের চাইতে দ্বিগুণ হতাশা দেখতে পাওয়া যায়। আপনি যদি নিয়মিতভাবে অসুস্থ থাকেন বা হতাশা বোধ করেন, তাহলে বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করুন। প্রতিদিন আপনার সাথে যে ভালো ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলোকে খুঁজে বের করুন। চারপাশের মানুষকে ও নিজেকে ধন্যবাদ জানান। মানসিক ও শারীরিকভাবে ভালো থাকার অন্যতম সেরা একটি উপায় হচ্ছে এটি।

স্বাবলম্বন: আপনার বয়স যতটাই হোক না কেন, নিজেকে থামিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। খানিকটা হাঁটাচলা করা, শরীরচর্চা করা, কার্ডিও- যেটাই হোক না কেন, প্রতিদিন কিছুটা সময়ের জন্য নিজেকে সচল রাখুন। এতে করে আপনার হাড় ও পেশী সুস্থ থাকবে। আর মানসিকভাবে সুস্থ থাকবেন আপনিও।

নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ: আপনি হয়তো জানেনই না যে, আপনার শরীরে চিন্তিত হওয়ার মতো কোনো সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যেকোনো সমস্যাকেই প্রতিরোধ করা সহজ হয়। তাই, নিয়মিত চেক-আপ করুন। এতে করে শারীরিক যেকোনো সমস্যার হাত থেকেই সহজে মুক্তি পেতে পারবেন।

হাসিখুশি ও মিশুক স্বভাবী: গবেষকরা জানান, নারীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার অনেকটাই নির্ভর করে চারপাশের মানুষের সাথে তার সম্পর্কের ওপর। পরিবার, বন্ধু বা ভালোবাসার মানুষ- আপনার পাশের মানুষটা যেই হোক না কেন, তার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখুন। সামাজিক পরিবেশে যাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার মস্তিষ্ক আরও কার্যকরীভাবে কাজ করতে সক্ষম হবে।

মস্তিষ্ককে সচল রাখা: শরীরের মতো আপনার মস্তিষ্কও ব্যবহারের অভাবে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। তাই নিয়মিত একে সচল রাখতে, স্মৃতিশক্তি ঠিকঠাক রাখতে, নানারকম মানসিক খেলা খেলুন। নতুন ভাষা শিখুন, ধাঁধা মেলান। আপনার এমন ছোট ছোট কাজের ফলাফল হিসেবেই আপনার মস্তিষ্ক সুস্থ থাকবে। আর তাতে আপনার আউট লুকটা হবে আরও আকর্ষণীয়, মোহনীয় ও আবেদন ছড়ানো।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন