চোখের নীচে কালো দাগঃ কারণ ও সমাধান

  29-12-2019 05:13PM

পিএনএস ডেস্ক:"মিসেস ইয়াসমিন (ছদ্মনাম) এসেছেন ক'দিন থেকে তার ভালো ঘুম হচ্ছেনা। মন খারাপ হচ্ছে। মেজাজ ও কেমন খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। তবে এ সমস্যার চেয়ে প্রকটভাবে ভাবে অন্য আরেকটি সমস্যা যা তাকে বিব্রত করছে এটা হলো তার চোখের নীচে কেমন একটা কালচে হয়ে যাচ্ছে। তার রঙ কিছুটা ফর্সা হওয়ায় তা আরো বেশি করে সবার নজরে আসছে। তাকে বেশ রোগা রোগা ও লাগছে।

ইদানীং ইয়াসমিন পারিবারিক অনুষ্ঠানে যাওয়া আসা বন্ধ করে দিয়েছেন, কেননা সবাই তাকে এ নিয়ে জিগ্যেস করে। তিনি আরো বেশি বিব্রত বোধ করেন এ নিয়ে। এটাও তার বিষন্নতার ও একটি কারন। কি করলে তার এ বিষন্নতা কাটবে তার ঘুম হবে এবং তার চোখের নীচের কালো দাগ গুলো যাবে, এ জন্যেই সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে আসা। ডাক্তার দেখিয়েছেন কিন্তু লাভ হয়নি, মনে হচ্ছে কালো দাগ আরো বাড়ছে। তিনি পরিত্রান চান এ বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে।"

চোখের নীচে কালি আসলে কি এর রহস্য আসুন জেনে নেই,

কারো কারো চোখের নীচে কালচে দাগ দেখা যায়। এ নিয়ে তারা থাকেন উদ্বিগ্ন। অনেক সময় সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে বিব্রত বোধ করেন।

চোখের নীচের চামড়া খুবই পাতলা। পাতলা চামড়া কোন কারনে আরো পাতলা হলে তার নীচের রক্তনালি ও তার ভিতর দিয়ে প্রবহমান লালচে রক্ত আরো বেশী স্পষ্ট হয়ে উঠে। ফলে চোখের নীচ কালচে দেখায়। বয়স হলে চোখের নীচের পাতার চামড়া ও মাংসপেশী গুলো ক্রমশ পাতলা দূর্বল হয়, ফলে এতে সহজে পানি ও চর্বি জমে চোখের নীচকে আরো বেশী কালচে করে তুলে।

দীর্ঘক্ষণ গভীর ঘুম থেকে উঠার পর অনেক সময় চোখের নীচ ফোলা ফোলা থাকে। এর কারন ঘুমের সময় দীর্ঘক্ষণ চোখের পাতা স্থীর থাকে, ফলে চামড়ার নীচে কিছুটা পানি জমে চোখের নীচ সামান্য ফোলা ফোলা ভাব নিয়ে আসে। তবে ঘুম থেকে উঠার পর চোখের পাতা নড়াচড়া বেড়ে যায় এবং সেই জমে থাকা পানি সরে গিয়ে ফোলা ভাব কমে যায়। এটা অনেক টা দীর্ঘ সময় বসে থাকায় পায়ে পানি জমার মতো

নানা কারণে চোখের নীচ কালচে হয় যেমন:

★অঘুমা

★টেনশন

★স্ট্রেস

★এলার্জি

★চোখের পাতায় ইনফেকশন

★মেকাপ দীর্ঘ সময় রাখা

★বয়স জানিত

★জেনেটিক

★অতিরিক্ত লবন খাওয়া

★মন খারাপ, অবসাদ

★অতিরিক্ত কান্না করা

★ক্লান্তি, অবসাদ

★পানিশূন্যতা

★ধুমপান বা মাদকাসক্তি
কি করতে হবে? সমাধান কী?

★চোখের নীচে কালি যেহেতু পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে হয় তাই পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষের ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমাতে হয়।

★ঠান্ডা পানির শেক দিলে উপশম হয়।

★অনেক সময় টি ব্যাগ কে ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে চোখের নীচের পাতায় রাখলে কিছুটা উপশম হয়।

★ধুমপান থেকে বিরত থাকতে হবে

★এলার্জি থাকলে তার চিকিৎসা করতে হবে।

★কোন কারনে বিষন্নতা, স্ট্রেস, মন খারাপ থাকলে সাইকিয়াট্রিস্ট এর চিকিৎসা নিতে হবে।

★লবন কম খেতে হবে

★রাতে শোবার সময় মাথাটা বালিশের উপর একটু উঁচু করে শো'তে হবে। এতে কিছুটা উপশম পাওয়া যায়।

★ধুমপান বা মাদকাসক্তি ছেড়ে দিতে হবে।

★মেকাপ নিয়ে রাতে শোয়া যাবেনা।
মিসেস ইয়াসমিন আসলে পারিবারিক একটি বিষয় নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন ছিলেন ছিলেন। এ নিয়ে টানা কয়েকদিন তিনি অঘুমা কাটিয়েছেনে। ফলে ধীরে ধীরে তার চোখের নীচে কিছুটা কালচে ভাব চলে আসছে। আর চোখের নীচে এ কালচে ভাব তাকে আরো কিছুটা বিব্রত ও বিষন্ন করে তুলছিলো।

পুরো ব্যাপার একটার সাথে আরেকটা সম্পর্কিত। তাকে কাউন্সেলিং করা হলো, এ নিয়ে মোটেই চিন্তিত না হতে। উদ্বিগ্নতা পরিহার করে চলতে। তাকে আশ্বস্ত করা হলো ক'দিন স্লিপ হাইজেন মেইনটেন করে ঘুমালে তার চোখের নীচের এ কালচে ভাব অবশ্যই ধীরে ধীরে সেরে যাবে। কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি তাকে ও বাতলে দেয়া হলো যাতে দ্রুত তিনি উপশম পান।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন