গুটিতে দোল খাচ্ছে আম চাষীর স্বপ্ন!

  21-04-2021 07:21PM

পিএনএস, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : অনাবৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া আর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আশা-হতাশার দোলাচলে দুলছে আম চাষীর স্বপ্ন। অনাবৃষ্টি আর প্রখর তাপে আমের গুটি ঝড়ে পড়ছে। তার সাথে কিছু কিছু আমের গুটি ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চাষীরা গাছে স্প্রে করে ঔষধ প্রয়োগ করা পরও গুটি ঝরা ও ফাঁটা বন্ধ হচ্ছে না। তারপরও করোনার প্রভাবে আমের বাজার পাবে কি না তা নিয়ে চাষীরা হতাশায় ভুগছেন।

আম গাছের মুকুলের ডগায় ডগায় দোল খাচ্ছে আমের গুটি। দিন দিন বড় হচ্ছে আমের গুটি। আমের গুটিতে দোল খাচ্ছে চাষীর স্বপ্ন। নানা জাতের আম, স্বাধ এবং রংবেরঙের আমের রং লেগেছে চাষীর মনে। সোণালী এই স্বপ্ন পূরণে চাষীরা বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে মনে রয়েছে শংঙ্কা অনাবৃষ্টি, করোনা প্রাদুর্ভাবও বছরের শুরু থেকেই লেগেই আছে। বৈশাখের তান্ডব, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় ও শীলা বৃষ্টি আমের শত্রু। প্রকৃতির সাথে মিতালী করে চাষীরা সোনালী স্বপ্ন বুকে ধারণ করে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষীরা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানাগেছে, উপজেলায় ৫৮৫ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়ানো ছিটানো আম গাছ রয়েছে। এলাকায় স্থানীয় জাতের পাশাপাশি আম রূপালী, হিম সাগর, গোপাল ভোগ, বোম্বাই লতা, মলি¬কা, ল্যাংড়া, ফজলি সহ বিভিন্ন জাতের আম বাগানের সংখ্যা বেশি। তবে এ এলাকার গদাইপুরের বোম্বাই লতার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। আমের মুকুল থেকে যে পরিমাণ গুটি ধরেছে তাতে প্রচুর ফলনও হয়েছে। তবে অনাবৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে চাষীরা। উপজেলার গদাইপুর গ্রামের আম চাষী মোবারক ঢালী জানান, গাছে মুকুল আসার আগে বাগান পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল আসার পরে ও আগে দু’দফাসহ ছয় বার ছত্রাক নাশক স্প্রে করেছেন। তারপরও আমের গুটি ঝরা ও ফাঁটা বন্ধ করতে পারেনি। এ বছরও করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বিধায় বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে বাগান পরিচর্যা করায় অতিরিক্ত অর্থ খরচ হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ বছর আম গাছে প্রচুর পরিমাণ আমের গুটি ধরেছে। প্রকৃতিক বিপর্যায়ের উপর কারও কোনো হাত থাকে না। অনাবৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় আমের গুটি ঝরে ও ফেঁটে যাচ্ছে। এ জন্য আমচাষীদের সকাল ও বিকালে আম গাছের গোড়ায় পানি ঢালতে ও গাছে পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ থেকে কিছুটা হলেও আমের গুটি ঝরা ও আম ফেঁটে যাওয়া বন্ধ হতে পারে। এ বছর আম বাগান থেকে ৭ হাজার ২০ মেট্রিকটন আমের ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। করোনা প্রভাবে আমের বাজারে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে বড় ধরণের কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে পাইকগাছার আম চাষীরা ভালো ফলন পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পিএনএস/এসআইআর



@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন