শ্রাবণের বৃষ্টি মাথায় নিয়েই আমন মাঠে চাষিরা

  03-08-2022 03:14PM



পিএনএস ডেস্ক : শ্রাবণের বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আমন ধান চাষে মাঠে মাঠে নেমেছেন বগুড়ার চাষিরা। এখন দারুন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আমন চাষ হবে। এর সঙ্গে আবহাওয়া ঠিক ঠাক থাকলে রেকর্ড পরিমাণ আমনের ফলন পাওয়া যাবে বলেই আশাবাদী তারা।

খরচ কিছুটা কম হওয়ায় প্রতি বছরই লাভের মুখ দেখে আমন চাষিরা, এবারও ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দামের প্রত্যাশায় তারা। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে।

প্রখর রোদের কারণে জমিতে পানি না থাকায় কিছুটা দেরি করে এবার জেলায় আমন চাষ শুরু হয়েছে। অনেক এলাকায় শ্যালো মেশিন অথবা গভীর নলকূপের সেচ দিয়ে জমি প্রস্তুত করে আগাম চাষাবাদ শুরু করেছেন। তবে গত মাসের শেষ সপ্তাহে টানা বৃষ্টিপাতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এতে চাষিরা জমিতে চাষ দেয়াসহ জমি চাষাবাদের জন্য কাজ শুরু করেছেন। অনেকেই তাদের জমিতে ধানের চারা রোপন করেছেন।

বগুড়া সদর ও গাবতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষীরা জানান, ইরি ধানের চেয়ে খরচ কিছুটা কম হওয়ায় প্রতিবছরই আমন চাষ করে থাকেন। বৃষ্টি হওয়ায় এখন তারা চাষাবাদে ব্যস্ত। সেচ খরচ নেই বললেই চলে, তবে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় আমন চাষে। জেলার শেরপুর, শিবগঞ্জ, নন্দীগ্রামসহ সব উপজেলাতেই আমনের চাষ হয়ে থাকে।

বগুড়া সোনাতলা উপজেলার হুয়াকুয়া গ্রামের আমনচাষি মুসা মন্ডল জানান, বৃষ্টির পর জমি তৈরি করে বীজ লাগানো হয়েছে। উপজেলায় মাঠে মাঠে এখন চাষিরা আমন চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে। গত বছর আমনের ধানের দাম ভালো ছিল। এবারো ভালো দাম পাওয়া গেলে চাষিরা আমন ধান চাষে আগ্রহী হবে।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার নাহিদ হাসান জানান, বেশ কিছু জমিতে আমন চারা রোপণ শেষ হয়েছে। আরো জমি আছে যেগুলোতে চাষ শেষ করে বীজ লাগানোর কাজ চলছে। তবে নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি দিয়ে জমি তৈরি হলেও ঊঁচু জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে।


জানা গেছে, ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচে বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ২০ মন ধান পাওয়া যায়। জুলাই থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ধান রোপন করে চাষিরা। আগাম জাতের ধান অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে কাটা শুরু হলেও নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ধান কর্তন শেষে কৃষকের ঘরে উঠে সোনালি ফসল।

জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। চাল আকারে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৫২ হাজার মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত জেলায় কৃষক ৪০ শতাংশ জমিতে আমন রোপণ করেছে। ২০২১ সালে জেলায় ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর বিপরীতে ফলন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৬৮৩ মেট্রিক টন। ২০২০ সালে ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৮ হেক্টর জমিতে আমন চাষের পর মোট ফলন পাওয়া যায় ৫ লাখ ১৭ হাজার ২৩০ মেট্রিক টন।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, সব ঠিক থাকলে এবার আমনের বাম্পার ফলন হবে। উচ্চ ফলশীল ধান জাতের ব্রি-ধান ৮৭, ব্রি-ধান ৭৫, বিনা ধান-১৭ সহ অনেক জাতের ধান রোপণ করা হচ্ছে। এ জাতের ধান আগাম চাষ হয়ে থাকে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দুলাল হোসেন জানান, ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষক এবারো আমন চাষে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের চেয়ে এবারও ভালো ফলন হবে। তিনি আরো জানান, গত বছরের চেয়ে চলতি বছর আমন চাষের জমি বেড়েছে। যে কারণে ফলনও বেশি হবে।

পিএনএস/আনোয়ার


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন