পাউবোর ই-টেন্ডারে ভেজাল-(পর্ব-১)

  12-06-2023 04:11PM

পিএনএস (মো: শাহাবুদ্দিন শিকদার): পাউবোর ইজিপি পদ্ধতির টেন্ডারে ভেজাল প্রবেশ করেছে। পাউবোর চিহ্নিত কয়েকটি ডিভিশনে নির্বাহী প্রকৌশলীরা ভেজাল কৌশল প্রয়োগ করে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিচ্ছেন। কোন কোন নির্বাহী প্রকৌশলী অত্যন্ত ঘৃণিত পদ্ধতিতে সাব কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করে কাজের গুণগত মানের বারোটা বাজিয়ে যাচ্ছেন।

পাউবোর সূত্র জানায়, সাধারণত: তিন উপায়ে ইজিপি টেন্ডারে ভেজাল করা হচ্ছে। এগুলো হলো: (১) জাল অভিজ্ঞতার সনদ প্রদান এবং তার ব্যবহার, (২) নন শিডিউল আইটেমের মাধ্যমে দরপত্র নিয়ন্ত্রন এবং (৩) মন্ত্রনালয় এবং ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটিকে এড়াতে দরপত্রের প্যাকেজ সাইজ ছোট করা। এই তিনটি ভেজাল পদ্ধতিতে পাউবোতে বেশী টেন্ডারবাজি করা হচ্ছে। এতে পাউবোর এক শ্রেণীর প্রকৌশলী অবৈধভাবে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক বনে যাচ্ছে। এই তিনটি ভেজাল পদ্ধতির বাইরে আরো বেশ কয়েকটি ভেজাল প্রক্রিয়ায় দরপত্র জালিয়াতি হচ্ছে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় অবহিত হলেও রহস্যজনক কারণে অনেক সময় আইনানুগ ব্যবস্থা গৃহীত না হওয়ায় দূর্নীতিবাজ প্রকৌশলীরা আস্কারা পেয়ে যাচ্ছে। দূর্নীতির সুস্পষ্ট প্রমাণ মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকার পরেও শুধুমাত্র দরপত্র বারবার আহবানের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে প্রকল্প। এমনও দেখা গেছে, জালিয়াতি ও দূর্নীতির সুস্পষ্ট প্রমাণের পরেও দূর্নীতিবাজদের শুধুমাত্র বদলী করে হাস্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের একটি ডিভিশনে পরপর ৪ বার দরপত্র আহবান করেও ভেজাল সনদের ভূত তাড়ানো যায়নি। চট্রগ্রাম জোনের একটি ডিভিশনে এবং সেন্ট্রাল জোনের একটি ডিভিশনেও ভেজাল সনদের ভূড়ি ভূড়ি ব্যবহার হয়েছে এবং হচ্ছে বলে ব্যাপক প্রচারণা রয়েছে।

পাশাপাশি খুলনা জোনে চিহ্নিত কিছু প্রকৌশলীর সাব কন্ট্রাক্ট বাণিজ্য চরমে উঠেছে। কোথাও কোথাও প্রকৌশলীগণ আলাদা ঠিকাদারী অফিস চালিয়ে যাচ্ছেন এবং নিজের আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের তার সাব কন্ট্রাক্ট ব্যবসা দেখাশোনা করার জন্য রেখেছেন যা একেবারেই ওপেন সিক্রেট বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কোন কোন প্রকৌশলী আবার জিও ব্যাগ বিক্রির কমিশন এজেন্টে পরিণত হয়েছেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার এই যে, একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিভিল এভিয়েশন অথরিটি প্রদত্ত ড্রেজিং কাজের অভিজ্ঞতা দেখিয়ে পাউবো থেকে কাজ বাগিয়ে নিয়েছে। অথচ সিভিল এভিয়েশন অথরিটি কস্মিনকালেও ড্রেজিং করে না। কিন্তু শুধুমাত্র ঘুষ খেয়ে অবলীলায় কাজ দিয়েছে একটি ডিভিশন।

অভিজ্ঞমহল মনে করেন, পাউবোর দূর্নীতিবাজদের লাগাম টেনে ধরার সময় এসেছে। এক্ষুনি এদের নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পাউবোর ইমেজ রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।

ভুক্তভোগীমহল এ ব্যাপারে দুদক, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। (চলবে)

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন