পিএনএস (মো: শাহাবুদ্দিন শিকদার): পাউবোর অধিকাংশ স্থাপনা নির্মানের পরপরই অন্য সংস্থার নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় সেগুলোর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা কঠিনতর হয়ে পড়েছে। পাউবোর অনেক তরুণ অফিসারের জানাই নেই তাদের অহংকার করার মতো স্থাপনাগুলো কি কি, তা কখন বাস্তবায়িত হয়েছিল? এখন এগুলো কি অবস্থায় কোন সংস্থার দখলে বা নিয়ন্ত্রণে আছে? নোয়াখালী জেলার তোহা বাঁধ যা কমরেড তোহার উদ্যোগে পাউবো কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল তার ইতিহাস এখন পাউবোর কাছে নেই। নোয়াখালীর মুছাপুর ক্লোজার যা পাউবোর এক দশকের শ্রম আর ঘামের ফসল তার নিয়ন্ত্রণ এখন পাউবোর কাছে নেই। ফলে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমান জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। উদ্ধার হওয়া জমিতে ইতিমধ্যেই কুড়েঘর তুলেছে দখলদার শ্রেণী। অথচ এই জায়গায় বনায়ন হতে পারতো, হতে পারতো বিনোদন পার্ক কিংবা ইকো পার্ক। এই উদ্ধার করা জমি কিভাবে, কাদের পরিশ্রমে, কতো টাকায় বাস্তবায়িত হয়েছে তার বিবরণ সম্বলিত একটা ডিসপ্লে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু মুছাপুর ক্লোজারে এর কোনটাই হয়নি। অবশ্য পাউবোর নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ কামনা করে পত্র লিখেছেন। যদিও অদ্যাবধি জেলা প্রশাসন এই ব্যাপারে কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। পাউবো তিস্তা ব্যারেজে যাওয়ার এককালের নির্মিত ইন্সপেকশন রোডটি এখন সড়ক ও জনপথের আঞ্চলিক মহাসড়ক। এই অবকাঠামো যে পাউবো নির্মান করেছিল তার কোন চিহ্ন পর্যন্ত এই আঞ্চলিক মহাসড়কে নেই।
অপরদিকে, তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্ট থেকে ভারত সীমান্ত পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার বাঁধ এখন দখলদারদের আধিপত্যে বিপর্যস্ত। এখানে বিপুল ব্যয়ে নির্মিত স্পারগুলোতে মানুষ ঘর-সংসার পেতেছে, গোয়াল-ঘর তুলেছে, খড়ের গাদা তুলেছে। যার জন্য নির্মিত স্পারগুলো সুফল পাচ্ছে না। এগুলো মাঝে মাঝেই রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরী হলেও নানাবিধ কারণে তা পরিত্যক্ত হয়ে আছে। দেখা গেছে, সিরাজগঞ্জের অহংকার পাউবোর ক্রসবারগুলোতে কে বা কারা চায়না বাঁধ নামফলক ঝুলিয়ে দিয়েছিল। পরবর্তীতে এই প্রতিবেদক সিরাজগঞ্জ পাউবোর সেই সময়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব হাসান ইমাম সাহেবের ( বর্তমানে প্রধান প্রকৌশলী এবং সিইআইপি প্রকল্পের পিডি) দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি উর্ধতনমহলের অনুমোদন ক্রমে চায়না বাঁধের নাম ফলক সরিয়ে সেখানে পাউবোর ক্রসবার নামফলক ঝুলিয়ে দেন। কিন্তু সূচনালগ্নে চায়না বাঁধ লেখার কারণে এটাকে এখনো মানুষজন চায়না বাঁধ বলে। অথচ চায়না হারবার এই বাঁধের ঠিকাদার মাত্র। দেখা গেছে, সারা দেশে শত শত কিলোমিটার বেড়ী বাঁধ, শহর রক্ষা বাঁধ, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ, টি গ্রোয়েন, আই গ্রোয়েন, স্পারগুলো এখন এলজিইডি, সওজ এবং জেলা প্রশাসনের দখলে চলে গেছে। এলজিইডি তো পাউবোর নির্মিত বাঁধ দখলে নেয়ার পর সেখানে পাউবোকে নিয়মিত মনিটরিং করতে বাঁধা প্রদান করে থাকে। এই ব্যাপারে আন্ত: মন্ত্রণালয়ের বৈঠক করে পাউবোর স্থাপনা/ অবকাঠামো পাউবোর দখলে রাখা অত্যন্ত জরুরী। পর্যবেক্ষকমহল এই ব্যাপারে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে করে দূর্যোগকালে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহন সহজতর হয়।
পাউবোর অধিকাংশ স্থাপনা অন্য সংস্থার নিয়ন্ত্রণে।। তৈরী হচ্ছে মারাত্নক ঝুঁকি।। প্রকৃত উদ্দ্যেশ্য সাধিত হচ্ছে না।। দেখার কেউ নেই
21-07-2023 03:40PM