হিলিতে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

  29-05-2021 04:41PM

পিএনএস ডেস্ক : আইপি জটিলতার কারণে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় ও দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমার কারণে সপ্তাহের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে আবারও বেড়েছে আমদানিকৃত ও দেশীয় দুই পেঁয়াজের দাম।

এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলা জাতীয় পণ্যটির এমন দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষজন।

অপরদিকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু না হলে ও দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ না বাড়লে আপাতত দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

শনিবার সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ পূর্বে হিলি বাজারে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দেশীয় পেঁয়াজের দাম এক সপ্তাহ পূর্বে ৪০টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৪২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ইদ্রিস আলী ও শাহনেওয়াজ খান বলেন, আবারও পেঁয়াজের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়তে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা করে বেড়েছে। বাজারের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই, যে যার ইচ্ছামতো পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে। এভাবে যদি পেঁয়াজের দাম বাড়ে তাহলে আমাদের মতো মানুষদের এত টাকা দিয়ে পেঁয়াজ কিনে খাওয়া সম্ভব নয়, তাই বাধ্য হয়ে পেঁয়াজ খাওয়াই ছেড়ে দিতে হবে। যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, তেলের দাম বাড়ছে তাতে করে করোনাকালীন এই সময়ে আমাদের তো সেভাবে আয় বাড়ছে না।

তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার যাতে করে আমাদের মতো গরিব মানুষ একটু কমদামে খেতে পারে। এ ছাড়া সরকারিভাবে টিসিবির মাধ্যমেও যাতে পেঁয়াজ দেওয়া হয় সেই দাবিও জানাচ্ছি।

হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা ফিরোজ হোসেন ও শাকিল খান বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক করে পেঁয়াজ আমদানি হতো যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হতো যার কারণে পেঁয়াজের বাজার অনেক কম ছিল। কিন্তু আইপির কারণে এক মাস ধরে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে।

কিছুদিন আগে রেলপথে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল যা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের পাশাপাশি আমদানিকারকদের গুদামে কিছু পেঁয়াজ ছিল যা আমরা এত দিন কিনে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতাম। কিন্তু সেসব পেঁয়াজ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ নেই বললেই চলে।

দেশীয় পেঁয়াজের উপর চাপ বাড়ায় পেয়াজের দাম বাড়ছে। এছাড়াও পাবনা মেহেরপুরসহ যেসব অঞ্চলে দেশীয় পেঁয়াজের উৎপাদন হয় ভারতীয় পেঁয়াজ না থাকায় এখন অনেকেই দেশীয় পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছে। যার কারণে এসব মোকামগুলোতে পেঁয়াজের সংকট তৈরি হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন বলেন, ভারত থেকে দেশে পেঁয়াজ আমদানির জন্য ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) ছিল তা গত ২৯ এপ্রিল থেকে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এর পর নতুন করে আর কোনো পেঁয়াজ আমদানির জন্য ইমপোর্ট পারমিট না পাওয়ায় এর পর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে।

হিলি স্থলবন্দরের অনেক আমদানিকারক পেঁয়াজ আমদানির জন্য ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) চেয়ে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত কোন আইপি ইস্যু হয়নি। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের কারণে দেশে ইতিমধ্যেই পেঁয়াজের দাম বাড়তির দিকে। তাই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমোদন দেওয়া উচিত বলে জানান তিনি।

পিএনএস/এসআইআর


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন