কনসার্ট ফর বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতে ডাকটিকিট অবমুক্ত

  01-08-2021 03:54PM

পিএনএস ডেস্ক : আজ ১ আগস্ট, মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের জন্য তহবিল সংগ্রহে জর্জ হ্যারিসনের ঐতিহাসিক ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ এর সুবর্ণজয়ন্তী। এ উপলক্ষে ১০ টাকা মূল্যমানের স্মারক ডাকটিকিট ও একই মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করা হয়েছে।

রোববার (১ আগস্ট) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটাকার্ড উদ্বোধন করেন। এসময়ে তিনি এ সংক্রান্ত একটি সিলমোহর ব্যবহার করেন।

‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ এর সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মোস্তাফা জব্বার একটি বিবৃতি দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের এ দিনে বাংলাদেশের শরণার্থীদের সাহায্য করতে, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে এ ধরনের বড় একটি অনুষ্ঠান বিশ্বে প্রথমবারের মতো হয়েছিল। নিউ ইয়র্কের মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে পন্ডিত রবিশংকরের প্রচেষ্টায় এ অনুষ্ঠানটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অবিস্মরণীয়।

বিবৃতিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কনসার্টের গানের মূল কথাই ছিল বিশ্বের মানুষের কাছে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান।

তিনি বলেন, গানের কথায় এমন আবেদন ছিল যে ‘সবার কাছে মিনতি জানাই আজ আমি তাই/কয়েকটি প্রাণ এসো না বাঁচাই’ বা ‘এত যে বেদনা রাখি দূরে/দেবে না তোমার ক্ষুধিতকে রুটি সামান্য দুটি/অথবা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ/দেখছি সেখানে সকলই ধ্বংস/কত শত প্রাণ মরে নিঃশেষ/দেখিনি এমন বেদনা অশেষ/বাংলাদেশ বাংলাদেশ’।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ এর বড় আকর্ষণ ছিলেন জর্জ হ্যারিসন ও বব ডিলান। জর্জ হ্যারিসন আটটি গান গেয়েছিলেন। বব ডিলান গেয়েছিলেন পাঁচটি গান। রিঙ্গো স্টার ও বিলি প্রেস্টন একটি করে গান করেছিলেন। লিওন রাসেল একটি একক এবং ডন প্রেস্টনের সঙ্গে একটি গান করেছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষে জর্জ হ্যারিসন গেয়েছিলেন তার সেই অবিস্মরণীয় গান ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’।

তিনি জানান, গানটি জর্জ হ্যারিসনের নিজের লেখা এবং সুর করা। গানের মূল কথাই ছিল বিশ্বের মানুষের কাছে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান। জর্জ হ্যারিসন পুরো গানটা উচ্চ স্বরে করুণ বিলাপের সুরে গভীর মানবিক ও বিপ্লবী আবেদন নিয়ে গেয়েছিলেন। দর্শক-শ্রোতা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে আবেগে অশ্রুসিক্ত হয়েছিল। সেদিনই বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি স্বাধীনতা পাওয়ার আগেই স্বতন্ত্র দেশ হিসেবে পরিচিত হয়েছিল।

মোস্তাফা জব্বার জানান, পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের নাম শুনেছিল, জেনেছিল সেদিনের চলমান মুক্তিযুদ্ধের কথা, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসলীলার কথা।

’আই মি মাইন’ বইয়ে জর্জ হ্যারিসন এর লেখার উদ্ধৃতি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, হ্যারিসন লিখেছেন ‘মোদ্দা কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের ঘটনাবলির ব্যাপারে আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। আমরা যখন কনসার্টের প্রস্তুতি নিচ্ছি, মার্কিনরা তখন পাকিস্তানে অস্ত্র পাঠাচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মৃত্যু হচ্ছে, কিন্তু সংবাদপত্রে শুধু কয়েক লাইন, ‘ও, হ্যাঁ, এখনো এটা চলছে।’ আমরা ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছিলাম। এখনো বাঙালি রেস্তোরাঁয় এমন সব ওয়েটারের সঙ্গে আমার দেখা হয়, যারা বলেন, ‘ওহ্, মিস্টার হ্যারিসন, আমরা যখন জঙ্গলে লড়াই করছিলাম, তখন বাইরে কেউ আমাদের কথা ভাবছে, এটা জানাটাও আমাদের জন্য ছিল অনেক কিছু।’

স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটাকার্ড বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা জিপিও’র ফিলাটেলিক ব্যুরো এবং পরে দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান ডাকঘর থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

পিএনএস/এসআইআর

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন