ইয়েমেনে সরকারি বাহিনী ও হুতি বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে নিহত ৫০

  16-09-2021 09:14PM

পিএনএস ডেস্ক : ইয়েমেনের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ আল বায়েদায় সৌদি নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী ও ইরানের সমর্থনপুষ্ট হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মোট ৫০ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা এএফপিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা।

এএফপিকে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বুধবার হুথি বিদ্রোহীদের একটি দল আল বায়েদায় প্রবেশ করেছিল। সেখানে যৌথ বাহিনীর সেনা সদস্যদের সঙ্গে তাদের সংঘাত হয়েছে এবং সেই সংঘাতে একজন কর্নেলসহ ২০ সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন।’

‘হুথিদের তরফেও প্রাণহানি হয়েছে। আমরা যতদূর জেনেছি, ৩০ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছে।’

ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চল দখলে নেওয়ার পর এবার দেশটির মধ্যাঞ্চলের দখল নিতে তৎপরতা চালাচ্ছে হুথি বিদ্রোহীগোষ্ঠী। পাশাপাশি দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় মারিব শহর, যেটি যৌথ বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি এবং এখন পর্যন্ত হুথিদের দখলে আসেনি, সেই শহরটি করায়ত্ত করতেও জোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।

ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে আছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল। অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল দখল করে নিয়েছে হুথি বিদ্রোহীগোষ্ঠী। ওই অঞ্চলের একমাত্র শহর মারিব, যার দখল এখনও নিতে পারেনি তারা।

গত ফেব্রুয়ারিতে একবার মারিব দখলে অভিযান চালিয়েছিল হুথিরা, কিন্তু সেবার বিপুলসংখ্যক যোদ্ধার প্রাণহানি হওয়ায় কয়েকমাস স্থগিত ছিল তাদের সেই শহর দখলের অভিযান।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের মারিবে অভ্যন্তরীণ বাস্ত্যুচুত হয়েছেন প্রায় ১০ লাখ মানুষ। এই মানুষরাই নতুন সংঘাতের কেন্দ্রে চলে এসেছেন।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

কিন্তু এই অভিযানের শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।

ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ছায়াযুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং একদা স্বচ্ছল এই দেশটি। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ খাদ্য ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের গুরুতর সংকটে ভুগছেন।

পিএনএস-জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন