সাক্ষাতের জন্য অনুমতি প্রার্থনার শিষ্টাচার

  27-07-2022 08:27AM



পিএনএস ডেস্ক : অনেক সময় আত্মীয়স্বজন- বন্ধুবান্ধবসহ অনেকের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাতের প্রয়োজন হয়। সাক্ষাতের জন্য ইসলামে রয়েছে চমৎকার নীতিমালা।
সাক্ষাতের গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য বাইরে থেকে অনুমতি চাওয়া। অনুমতি চাওয়ারও রয়েছে অনেক শিষ্টাচার। এখানে আটটি শিষ্টাচার উল্লেখ করা হলো- ১. অনুমতি চাওয়ার আগে সালাম দেওয়া : সাক্ষাৎ করতে ভিতরে যাওয়ার জন্য অনুমতি চাওয়ার প্রথম ও প্রধান শিষ্টাচার হলো বাইরে থেকে সালাম দেওয়া। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মোমিন, তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য ঘরে প্রবেশ কোরো না, যে পর্যন্ত না (অনুমতি প্রার্থনার মাধ্যমে) সম্প্রীতি সৃষ্টি কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ।’ (সুরা নুর, আয়াত ২১) সংখ্যাগরিষ্ঠ ওলামায়ে-কিরাম এ আয়াত দ্বারা অনুমতি প্রার্থনার জন্য আগে সালাম দেওয়ার কথা প্রমাণ করেছেন। ২. বেশি হলে তিনবার অনুমতি চাওয়া : তিনবার অনুমতি চাওয়ার পরও সাড়া না পেলে ফিরে আসা। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ তিনবার অনুমতি চাওয়ার পরও তাকে অনুমতি দেওয়া না হলে সে যেন ফিরে আসে।’ (বুখারি) এজন্য তিনবারের বেশি কারও বাসা-বাড়ির গেটে কড়া নাড়া ঠিক না। কেননা সাক্ষাৎদাতা হয়তো অনুমতি দিতে চাচ্ছেন না কিংবা কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকায় সাক্ষাৎ দিতে পারছেন না। ৩. আওয়াজে মধ্যপন্থা অবলম্বন : ভিতরে শোনা যায় এমন হালকাভাবে দরজায় আওয়াজ দেওয়াই যথেষ্ট। জোরে আওয়াজ দিলে ভিতরের লোক বিরক্ত হতে পারে। আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.)-এর দরজাগুলোয় নখ দিয়ে কড়া নাড়া হতো।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ) জোরে আওয়াজ দেওয়া যেমন শিষ্টাচার পরিপন্থী, এমনি বিরতিহীন আওয়াজ দেওয়াও শিষ্টাচার-বহির্ভূত কাজ। তাই একবার আওয়াজ দিয়ে অল্পক্ষণ অপেক্ষা করা কর্তব্য। (মাওসুআতুল আদাবিল ইসলামিয়া) ৪. অনুমতি প্রার্থীর নিজের পরিচয় দেওয়া : অনুমতি প্রার্থীর জন্য বাইরে থেকে স্পষ্ট পরিচয় দেওয়া, আমি আমি বলতে না থাকা। এতে ভিতরের লোকজন ব্রিবতবোধ করে। একবার মহানবী (সা.)-এর কাছে জাবের (রা.) এসে দরজা কড়া নাড়লেন। নবী (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, কে? জাবের (রা.) বললেন, আমি। নবী (সা.) অপছন্দ প্রকাশ করে বললেন, আমি আমি! অর্থাৎ স্পষ্ট পরিচয় দেবে, আমি আমি কী? (বুখারি) ৫. দরজার ফাঁকা দিয়ে না তাকানো : দৃষ্টির হেফাজতের জন্য বাইরে থেকে গেটের ফাঁকা দিয়ে না তাকানো অনুমতি প্রার্থনার গুরুত্বপূর্ণ শিষ্টাচার। কেউ এভাবে তাকালে মহানবী (সা.) খুব কঠোর সুর উচ্চারণ করতেন। সাহল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর কামরায় ছিদ্র দিয়ে তাকাল। এ সময় মহানবী (সা.)-এর কাছে একটি কাঠি ছিল যা দিয়ে তিনি মাথা চুলকাতেন। মহানবী (সা.) বললেন, যদি আমি জানতাম যে তুমি ছিদ্র দিয়ে তাকাচ্ছ তাহলে এ কাঠি তোমার চোখে গেড়ে দিতাম। অনুমতি প্রার্থনা তো দৃষ্টির হেফাজতের জন্যই নির্ধারণ করা হয়েছে।’ (বুখারি) ৬. দরজার একদম সামনে না দাঁড়ানো : ভিতরে প্রবেশ করার আগে একদম দরজার সামনে দাঁড়িয়ে না থাকা; বরং দরজার ডানে কিংবা বাঁয়ে দাঁড়ানো। আবদুল্লাহ ইবনে বুসর (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) কারও বাড়িতে গেলে একদম দরজার সামনে দাঁড়াতেন না; বরং ডানে কিংবা বাঁয়ে দাঁড়াতেন।’ (আবু দাউদ)

লেখক : নির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম ও মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম বাগে জান্নাত, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।


পিএনএস/আনোয়ার


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন