পিএনএস ডেস্ক: রাজধানীর বাড্ডায় সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করতে খোঁজখবর নিতে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হন তাসলিমা বেগম রেনু। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় এক আসামির মৃত্যুদণ্ড ও চার জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, ‘একজন মানুষ যখন পশু হয়ে যায়, তখন তার জীবন কেড়ে নেওয়াই শ্রেয়।’
বুধবার (৯ অক্টোবর) ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-৬-এর বিচারক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম এ রায় দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘গণপিটুনির নামে মধ্যযুগীয় বর্বরতায় মানুষ হত্যার লাইসেন্স দেওয়া হলে তা এ সমাজের যেকোনো মানুষের জন্য আতঙ্ক ও অনিরাপত্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হলে এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটবে এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।’
জানা গেছে, আসামি ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড এবং আসামি রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ ওরফে আজাদ মণ্ডল, কামাল হোসেন ও আসাদুল ইসলামকে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় ৮ আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২০ জুলাই রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হন তাসলিমা বেগম রেনু। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু। ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল হক ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই জনের বিরুদ্ধে দোষীপত্র দাখিল করেন। ২০২১ সালের ১ এপ্রিল ১৩ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। এরপর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়।
পিএনএস/রাশেদুল আলম
মানুষ যখন পশু হয়ে যায় তখন তার জীবন কেড়ে নেওয়াই শ্রেয়: রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত
09-10-2024 03:26PM