অদ্ভূত বিয়ে: কনে বট গাছ, বর পাকুড় গাছ

  02-04-2022 05:02PM

পিএনএস ডেস্ক:ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে জমকালো আয়োজনে বট গাছকে মেয়ে ও পাকুড় গাছকে ছেলে সাজিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যতিক্রমী এবিয়ের ঘটনা ঘটেছে উপজেলার ফুটানি বাজারের মহলবাড়ি গ্রামে।

শনিবার অতিথিদের দাওয়াত করে খাইয়ে এবিয়ে দেন গ্রামের ভেটেলি রাণী।

তিনি বলেন, তার সংসারে সব সময় সমস্যা লেগেই থাকত। তিনিও এসব সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতেন। পরিবারের কাউকে বলতে পারতেন না। নানা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি ও নিজের মনের ইচ্ছা পূরণ করতে বট-পাকুড় গাছের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

ভেটেলি রাণী বলেন, প্রাচীন যুগে হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা গাছের বিয়ে দিতেন। সময়ের বিবর্তনে এমন ঘটনা আর খুব বেশি চোখে পড়ে না। তবে গাছের বিয়ের এমন একটি ঘটনা ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ফুটানি বাজারের মহলবাড়ি গ্রামে।

মহলবাড়ি গ্রামের ভেটেলি রাণী ৮ বছর আগে ছেলে হিসেবে পাকুড়গাছ ও মেয়ে হিসেবে বটগাছ একসঙ্গে রোপণ করেন। একই গ্রামের পাথারু রায়কে বটগাছের (মেয়ে) বাবা সম্বন্ধ করে ফাল্গুন মাসের ১৯ তারিখে হিন্দু ধর্মের রীতি অনুযায়ী বিয়ে দেন। আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত করে ও ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে সম্পন্ন করেন।

ভেটেলি রাণী বলেন, আমি ও আমার পরিবার নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিলাম। সমস্যা সমাধানের জন্য এবং নিজের মনস্কামনা পূরণের উদ্দেশ্যে গাছের বিয়ে দেওয়ার চিন্তা করি।

আট বছর আগে দুটি গাছ একসঙ্গে রোপণ করি। এই মাসে বিয়ের মতো আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত করি। আমাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ফাল্গুনের ১৯ তারিখে সবাইকে নিয়ে গাছ দুটির বিয়ে সম্পন্ন করি।

বট কন্যার বাবা পাথারু রায় বলেন, প্রতিবেশি ভেটেলি রানী আমাকে বট কন্যার বাবা হওয়ার প্রস্তাব দেন। পরে আমি কয়েকজনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। তারা বলেন, মেয়ের বাবা হলে পরজন্মের জন্য ভালো। সব মানুষই পরবর্তী জীবনে ভালো কিছু করার আশা করে। সে কারণে আমি প্রস্তাবে রাজি হই। গত বাংলা মাসে (ফাল্গুন) দুটি পরিবারের সম্বন্ধে গাছ দুটিকে বিয়ে দিয়ে দেয়।

স্থানীয় পুরোহিত সুকুমার রায় বলেন, হিন্দু ধর্মে গাছের বিয়ে দেওয়া নিয়ে কিছু বলা নেই। এটিকে গাছের প্রতিস্থাপন বলে। শাস্ত্র অনুযায়ী একসঙ্গে দুটি গাছকে প্রতিস্থাপন করলে পরজন্মে মঙ্গল হয়। এ জন্য ছেলে গাছ ও মেয়ে গাছকে একসঙ্গে প্রতিস্থাপন করা হয়।

পিএনএস/আলাউদ্দিন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন