সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ৩০ বি‌শিষ্ট ব্যক্তি

  30-03-2023 03:46AM

পিএনএস ডেস্ক : প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে সাভারের আমবাগান এলাকার নিজ বাসভবন থেকে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ভোররাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে সাদা পোশাকের ব্যক্তিরা তুলে নিয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৩০ বিশিষ্ট নাগরিক। তারা সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার (২৯ মার্চ) এক বিবৃতিতে তারা বলেন, তুলে নেওয়ার ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত শামসের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ সময় তার পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করলেও শামসের সন্ধান পাননি। মূলত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের কারণে শামসকে শেষরাতে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা যায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ওই প্রতিবেদনে দেশের বাজার পরিস্থিতি ও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে একজন দিনমজুরের বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। এ ঘটনায় শামসকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পারি। আমরা এ ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। রাতের বেলায় পরোয়ানা ব্যতীত কাউকে আটক করা সভ্য দেশে কল্পনাতীত। স্বাধীনতার মাসে নাগরিকদের এভাবে হয়রানি করায় আমরা ব্যথিত।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিনা পরোয়ানায় শামসকে আটক করে তার সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। সংবিধানের তৃতীয় ভাগের মৌলিক অধিকার অধ্যায়ের ৩৩ (১) অনুচ্ছেদে কারণ উল্লেখ না করে কাউকে আটকে রাখা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ শামসকে আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারেননি গণমাধ্যমকর্মীদের। দুপুরের পর গোলাম কিবরিয়া নামে যুবলীগের এক নেতার দায়ের করা মামলায় শামসকে আটক দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়।

শামস ছাড়াও সম্প্রতি গণমাধ্যমকর্মীদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক ও হয়রানিরর তথ্য আমাদের নজরে এসেছে। দিন দিন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত নিরাপত্তাও হুমকির মুখে। আমরা অবিলম্বে শামসুজ্জামান শামসকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিঃশর্ত মুক্তি এবং গণমানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানাই।

বিবৃতিতে সই করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবী সারা হোসেন, আইনজীবী সাকিব আলি, সাবেক কূটনীতিক ও সমন্বয়ক অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আবদাল আহমদ, সাংবাদিক ইলিয়াস খান, অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব, অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, ড. মারুফ মল্লিক, মাইদুল ইসলাম, রোজিনা বেগম, সায়দিয়া গুলরুখ, দিলশানা পারুল, শওকত হোসেন, ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, রবিউল করিম মৃদুল, জাকারিয়া পলাশ, ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি, এহসান মাহমুদ ও আরিফুল ইসলাম আদীব।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন