দেশের মানুষের এখন খারাপ সময় যাচ্ছে: মির্জা ফখরুল

  26-01-2022 08:53PM

পিএনএস ডেস্ক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ৭৫তম জন্মদিন আজ। ৭৪তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৮ সালের ২৬ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ে সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জীবনে কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিন পালন করেননি। প্রতিবারের মতো এবারও অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ-ই প্রথমে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাবা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। বিএনপি মহাসচিবের জন্মদিনে দলীয় নেতাকর্মীরাও তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

জীবন চলার পথের অনুভূতি ব্যাখ্যা করে বিএনপি মহাসচিব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমার জীবন ফুরিয়ে আসছে। জীবনটাকে সুন্দরই মনে হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের মানুষের এখন খারাপ সময় যাচ্ছে। তবুও আশা করি এই দেশ ও দেশের মানুষের জন্যে আগামীতে শুভ দিন আসবে। মানুষের কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ফিরে আসবে। জনগণের জীবন সুখময় হয়ে উঠবে। অবসান হবে সকল অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার।

তিনি আরও বলেন, ৭৪ বছর থেকে ৭৫ বছরে পা দিলাম। বলতে পারেন- একটা লং জার্নি। এই ৭৪ বছরে বহু পরিবর্তন দেখেছি, দেশের পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। বহু জীবন দেখেছি। অনুপ্রাণিত হয়েছি। বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজে পেয়েছি। যদিও বাংলাদেশের মানুষের এখন খারাপ সময় যাচ্ছে। তবুও মনে হয়েছে এই ৭৪ বছরের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এই সংগ্রামী মানুষ কখনো পরাজিত হয়নি। তাই আশার আলো দেখি। বিশ্বাস করি, পরিবর্তন আসবেই। মানুষ ভালো থাকবে।
মাত্র কয়েকদিন আগেই করোনার ধকল সামলিয়ে সেরে উঠেছেন বিএনপি মহাসচিব। স্ত্রী রাহাত আরা বেগমও একসাথে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

এর আগে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেছিলেন, আমি কখনও জন্মদিন পালন করিনি। ছোটবেলায় মা-বাবাও কখনো আমার জন্মদিন পালন করেননি। তখন আসলে তখন এসব জন্মদিন পালনের সংস্কৃতি ছিল না। এখন তো অনেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ প্রথম শুভেচ্ছা জানান। সে-ই প্রতিবছর আমার জন্মদিনটি মনে করিয়ে দেয়। বুধবার মধ্যরাতেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২০১৬ সালে বিএনপির মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি ২০০৯ সালে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব নির্বাচিত হয়ে রাজপথের এই প্রধান বিরোধী দলটির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের মার্চে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর তিনি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পান। টানা পাঁচ বছর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালনের পর ২০১৬ সালে দলীয় কাউন্সিলে তাকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করা হয়।

মির্জা ফখরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালেই বাম ধারার ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নেন এই যোদ্ধা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিসিএস দিয়ে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে ঢাকা কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। আরও কয়েকটি কলেজে অধ্যাপনা শেষে সরকারের পরিদর্শন ও আয়-ব্যয় পরীক্ষণ অধিদপ্তরে নিরীক্ষক হিসেবে কাজ করেন। পরে আবারও রাজনীতিতে ফিরে আসেন।

১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার পরের বছর যোগ দেন বিএনপিতে। ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে প্রথমে কৃষি মন্ত্রণালয় ও পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলেও সংসদে যোগ দেননি বিএনপির এই মহাসচিব।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন