পিএনএস ডেস্ক: রাজধানীর কাকরাইলে ডাকা সমাবেশ স্থগিত করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে জাপা চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারির স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল চত্বরে শনিবার (২ নভেম্বর) বেলা ২টায় অনুষ্ঠেয় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ২৯ ধারার ক্ষমতা বলে (সভাস্থল) পাইওনিয়ার রোডস্থ ৬৬ নং ভবন, কাকরাইলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যেকোনো প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করায় জাতীয় পার্টি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী কর্মসূচি জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
এর আগে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ দলের নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ২ নভেম্বর রাজধানীতে সমাবেশ এবং বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় দলটি। জাপার এমন কর্মসূচির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার গণঅধিকার পরিষদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা কয়েকজনকে নিয়ে জাতীয় পার্টি কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। মিছিলটি জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের কাছাকাছি গেলে সেখানে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিছিলে থাকা লোকজনের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর রাতেই জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ২ নভেম্বর সমাবেশের আয়োজনকে ঘিরে বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রজনতার ব্যানারে ছাত্র অধিকার পরিষদের একজন নেতার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি অফিসে ভাঙচুর করা হয়। জীবন দিয়ে হলেও শনিবার মহাসমাবেশ করবে জাতীয় পার্টি।
জাপা চেয়ারম্যানের এমন ঘোষণার পর ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, জাতীয় পার্টির ডাকা সমাবেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতি পুনরুত্থানের পরিকল্পনার অংশ, এই অপতৎপরতা বন্ধের জন্যই ছাত্র-জনতা জেগে উঠেছে।
এ সময় জাতীয় পার্টির সব কার্যালয়ের সামনে গণপ্রতিরোধ কর্মসূচি ঘোষণার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ তাদের দোসরদের যেন রাজনৈতিক সমাবেশের অনুমতি না দেওয়া হয় সেজন্য ডিএমপি কমিশনারসহ সবার প্রতি আহ্বান জানান ইয়ামিন মোল্লা। এরপর ডিএমপি এক বিজ্ঞপ্তিতে রাজধানীর কাকরাইল ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
এদিকে, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাফিউল ইসলাম শাফির পর এবার দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের উপদেষ্টা সাজ্জাদ রশিদ পদত্যাগ করেছেন।
এক বিজ্ঞপ্তিতে রশিদ উল্লেখ করেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এবং চাঁদপুর জেলার সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পতিত সরকারের বৈষম্যমূলক নানা আচরণের বিরুদ্ধে সর্বদা অবস্থান গ্রহণ করেছি। কিন্তু জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর দলীয় পক্ষপাতমূলক ও বৈষম্যমূলক কার্যক্রম, পরস্পরবিরোধী ও অসঙ্গতিপূর্ণ রাজনৈতিক নীতিহীন সিদ্ধান্তের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এবং চাঁদপুর জেলা সহ-সভাপতিসহ সকল পদ-পদবী থেকে অব্যাহতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এতে আরও বলা হয়, আমার সঙ্গে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার জাতীয় যুব সংহতি এবং জাতীয় ছাত্র সমাজের চার শতাধিক নেতাকর্মী জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন থেকে পদত্যাগ করবে।
পিএনএস/রাশেদুল আলম
জাতীয় পার্টির সমাবেশ স্থগিত
01-11-2024 11:07PM