চট্টগ্রামে তিন মাস পর করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন

  17-09-2021 02:42PM


পিএনএস ডেস্ক : চট্টগ্রামে একটানা তিনমাস পর করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন কেটেছে। অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে ৪ মাসের সর্বনি¤œ ৪১ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। আক্রান্তের হার সাড়ে ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম ২ দশমিক ৭১ শতাংশ। এ সময়ে আরোগ্য লাভ করেন ৬২২ জন।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

জেলার দৈনিক করোনা রিপোর্ট বিশ্লেষণে দেখা যায়, চট্টগ্রামে সর্বশেষ মৃত্যুশূন্য দিন কেটেছে ১৪ জুন। এদিন ১৫৮ জনের শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ছিল ১৬ দশমিক ৯০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে কম নতুন রোগী পাওয়া যায় ১৬ মে। এদিন ৩৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৭ জনের দেহে ভাইরাস মিলে। সংক্রমণের হার ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত ১ জন মারা যান। তবে চট্টগ্রামে গতকাল আক্রান্তের হার সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সর্বশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি সংক্রমণ হার এর চেয়ে কম, ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ পাওয়া গিয়েছিল।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিআইটিআইডি, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও নগরীর নয়টি ল্যাবে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৫১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ৪১ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩৪ জন এবং চার উপজেলার ৭ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে ৩ জন, মিরসরাইয়ে ২ জন এবং সীতাকুণ্ড ও বোয়ালখালীতে একজন করে রয়েছেন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ১ লাখ ১ হাজার ১৭২ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৭৩ হাজার ৩২৮ জন ও গ্রামের ২৭ হাজার ৮৪৪ জন।

গতকাল চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্তদের কারো মৃত্যু হয়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ২৭৯ জন রয়েছে। নতুন করে সুস্থ হয়ে ওঠেছেন ৬২২ জন। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা এখন ৮৫ হাজার ২৮৬ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ১০ হাজার ৩৫৪ জন এবং হোম আইসোলেশেনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৭৪ হাজার ৯৩২ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ১৬০ জন এবং ছাড়পত্র নেন ১২৩ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ৪৩৬ জন।

সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজ বাসস’কে বলেন, ‘সার্বিকভাবে গতকালের করোনা চিত্র ছিল স্বস্তিদায়ক। কিছুদিন ধরে সংক্রমণ হার কমে আসছিল, তবে প্রতিদিন কম-বেশি রোগীর মৃত্যু ঘটতো। এজন্য বয়স্ক ও আগে থেকে শারীরিক নানা জটিলতা থাকা মানুষদের আমরা বেশি সতর্ক থাকতে বলে আসছি। এছাড়া, করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। সংক্রমণ হার ৫ এর নিচে স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই।’

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৪৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এখানে নগরীর ৬ ও গ্রামের ৩ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ১৮২ টি নমুনার মধ্যে শহরের ৭ ও গ্রামের ২ টি করোনায় আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১৫০ টি নমুনার মধ্যে শহরের ৯ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৬৬ জনের নমুনায় শহরের ৪ জনের দেহে ভাইরাস পাওয়া যায়।

নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৪৭২ টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ২ টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৫২ নমুনার মধ্যে গ্রামের ২ টি, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ২৩ টি নমুনায় শহরের একটি, মেডিকেল সেন্টারে ১৮ টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের একটি এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ৮৬ নমুনায় শহরের ৪ টিতে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়।

এদিন জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৪ টি এবং কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো চট্টগ্রামের ৯ টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে সবক’টিরই নেগেটিভ রেজাল্ট আসে। তবে এন্টিজেন টেস্ট ও ল্যাব এইডে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ, চমেকে ৪ দশমিক ৯৪, সিভাসু’তে ৬ শতাংশ, চবি’তে ৬ দশমিক ০৬, শেভরনে ০ দশমিক ৪২, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৩ দশমিক ৮৪, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪ দশমিক ৩৫, মেডিকেল সেন্টারে ৫ দশমিক ৫৫, এপিক হেলথ কেয়ারে ৪ দশমিক ৬৫ এবং আরটিআরএল ও কক্সবাজার মেডিকেলে ০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। সূত্র : বাসস

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন