নীলফামারীতে নৌকার যোগ্য প্রার্থী না দেওয়ায় কৃষকলীগ সভাপতির মৃত্যু

  11-10-2021 08:53PM

পিএনএস ডেস্ক : নীলফামারীর সদর উপজেলার ১৫ নং লক্ষীচাপ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ত্যাগি নেতা কে দলীয় সমর্থন না দেওয়ায় এক সমর্থকের হৃদযন্ত্রের শ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। এঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জানা গেছে, ইউনিয়নের ত্যাগি আওয়ামী লীগ নেতা, দল থেকে সদ্য পদত্যাগকৃত সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যাম চরণ রায় (বাবু) কে দলীয় ভাবে মনোনয়ন দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু মনোনয়ন না দেওয়ায় সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে একই এলাকার বেলতলি নামক বাজারে দলীয় আলাপচারিতায় এক পর্যায়ে উত্তজিত হয়ে যান ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি প্রমথ চন্দ্র রায়। এসময় তিনি শ্যাম চরণ কে মনোনয়ন না দেওয়ায় উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের বিরদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন। এক পর্যায়ে প্রমথ চন্দ্র রায়ের হৃদযন্ত্রের শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে সেখানেই মৃত্যু ঘটে। তিনি দুবাছড়ি মালি পাড়া গ্রামের প্রয়াত বিষাদু চন্দ্র রায়ের পুত্র।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুদি ব্যবসায়ী বিনত কুমার রায় জানান, আজ সকালে প্রমথ চন্দ্র রায় ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ শতাধিক লোকজন আমার দোকানের সামনে ভীড় জমায়। এসময় নির্বাচনি বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপচারিতা করছিলেন তারা। এরই এক পর্যায়ে ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি প্রমথ চন্দ্র রায় শ্যাম চরণ কে নৌকা প্রতীক না দেওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে জেলা ও উপজেলা নেতাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা কালিন মাটিতে লুটে পড়েন এবং সাথে সাথে তার মৃত্যু হয় । ঘটনার একই বর্ননা দেন ভ্যান চালক ডিজেন চন্দ্র রায়।

প্রমথ চন্দ্র রায়ের ছেলে অনন্ত চন্দ্র রায় জানান, “আমার বাবা শ্যাম চরণ রায়ের একজন সমর্থক ছিলেন। বেলতলিতে সকালে লোকজনদের সাথে কথা বলাবলির সময় হার্টএ্যাটাকে মারা জান”।

এদিকে সরেজমিন সূত্রে আরও জানা যায়, ১৯৭৩ সাল হতে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতির দায়ীত্ব পালন করে আসছিলেন শ্যাম চরণ রায়। এরপর বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে তার বাড়িতে হামলা চালায় উগ্রপন্থীরা। ততকালিন সময় অনেক হয়রানিমুলক মামলারও শিকার হন তিনি। পরবর্তীতে একটানা নয় বছর সফল ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যাম চরণ রায় সাংবাদিকদের জানান, “এতদিন যাবত রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ আমার সাথে বেঈমানি করেছে। গত নির্বাচনে যে, বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরেছে এবারে দল তাকেই মনোনয়ন দিয়েছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করেছি। কোনোদিন দলের বিরোধীতা করিনি, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের চক্রান্তের ফলে আমি দলীয় মনোনয়ন হতে বঞ্চিত হয়েছি। জনগণ চায় বলে আওয়ামী লীগ সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি”।

এবিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত গোলাম মোস্তফা সাথে কথা হলে তিনি বলেন, “বিদ্রোহী প্রার্থী শ্যাম চরণ রায় বিপক্ষে নির্বাচন করলে আমার হেরে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে”।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “আমরা দলীয় ভাবে শ্যাম চরণ রায় কে প্রথম তালিকায় রেখে মোট পাঁচজনের নাম কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রেরণ করেছি। কিন্তু শ্যাম চরণ বিগত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় এবারে দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি”।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন