চট্টগ্রামে মণ্ডপে হামলার পেছনে নূরের সংগঠনের তিন নেতা: পুলিশ

  22-10-2021 05:48PM

পিএনএস ডেস্ক : চট্টগ্রামে একটি পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের নেতৃত্বাধীন যুব অধিকার পরিষদের তিন নেতা রয়েছেন।

পুলিশের দাবি, যুব অধিকার পরিষদের গ্রেপ্তার এই তিন নেতার ‘পরিকল্পনাতেই’ বিজয়া দশমীর দিনে (১৫ অক্টোবর) চট্টগ্রামের জেএম সেন হল পূজামণ্ডপে হামলা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের সাতকনিয়া ও নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার যুব অধিকার পরিষদের তিন নেতা হলেন- যুব অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক মো. নাছির (২৫), সদস্য সচিব মিজানুর রহমান (৩৭), বায়েজিদ থানা শাখার আহ্বায়ক মো. রাসেল (২৬)।

এছাড়া গ্রেপ্তারদের মধ্যে অন্যরা হলেন- ইয়ার মোহাম্মদ (১৮), মো. মিজান (১৮), গিয়াস উদ্দিন, ইয়াসিন আরাফাত (১৯), হাবিবুল্লাহ মিজান (২১), মো. ইমন (২১)ও ইমরান হোসেন।

এ নিয়ে ওই হামলার ঘটনায় ১০০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।

তাদের গ্রেপ্তারের পর কোতোয়ালি থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, যুব অধিকার পরিষদের চট্টগ্রামের ওই নেতাদের ‘পরিকল্পনাতেই’ ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিনে পূজামণ্ডপে হামলা হয়েছিল।

জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টার পর বিভিন্ন ছবি এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের নেতাদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে।

তিনি বলেন, হামলার মূল পরিকল্পনায় ছিলেন যুব অধিকার পরিষদ নেতা নাছির, মিজানুর ও রাসেল। তাদের পরিকল্পনাতেই জুমার নামাজ শেষে তাৎক্ষণিক মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। পরে সেই মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়। হামলার পর ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ভিডিও এবং স্থিরচিত্র দেখে তাদের চিহ্নিত করা হয়।

হামলার পরপর অভিযান শুরু হলে তারা বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের গতিবিধি নজরে রেখে সাতকারিয়া উপজেলা থেকে নাছিরকে এবং নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছেন— সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য তারা পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টা ও ব্যানার ভাঙচুর করেন। আসামিদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান ‍তিনি।

দুর্গাপূজার মধ্যে (১৩ অক্টোবর) কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ে অস্থায়ী একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে কয়েকটি মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

এরপর এই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, নোয়াখালী, রংপুরসহ দেশের কয়েকটি জেলায়। বিভিন্ন মন্দির-এলাকায় হামলা ঠেকাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে, ঘটে প্রাণহানির ঘটনাও।

এসব ঘটনার জেরে ১৫ জেরে অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিনে চট্টগ্রাম নগরীর জেএম সেন হল পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটে।

এদিন জুমার নামাজের পর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ থেকে মিছিল নিয়ে এসে জেএম সেন হল পূজামণ্ডপের গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায় হামলাকারীরা। পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৮৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকশ ব্যক্তিকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন