মেয়রকে কাদায় নামানোর চেষ্টা জনতার, অতঃপর সড়ক সংস্কারের আশ্বাস

  21-05-2022 09:18PM

পিএনএস ডেস্ক: রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে যাওয়ার প্রধান সড়কের ধারে একটি কলেজ ও দুটি বিদ্যালয় রয়েছে। এ সড়কটি বৃষ্টি হলেই হাঁটুসমান পানি জমে চলাচল করার অযোগ্য হয়ে পড়ে।

তাই শনিবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বেলা পৌনে একটা পর্যন্ত সড়কটি সংস্কারের দাবিতে এলাকাবাসী চারঘাট-বাঘা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় অবরোধ স্থলে চারঘাট পৌরসভার মেয়র এসে তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করলে লোকজন তাকে টেনে কাদা পানিতে নামানোর চেষ্টা করেন।

তবে তারা মেয়রকে কাদা পানিতে নামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে সাধারণের দাবির মুখে মেয়র সড়কটি মেরামতের আশ্বাস দেন। তার এ আশ্বাস শুনে সাধারণ জনগণ অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

রাজশাহীর চারঘাট পৌর এলাকার সরদহ ট্রাফিক মোড় থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটারের এই সড়কটি রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে যাওয়ার প্রধান রাস্তা। এই সড়কের পাশেই রয়েছে সরদহ মহিলা কলেজ, মুক্তারপুর উচ্চবিদ্যালয় ও মুক্তারপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। এই সড়ক বেহাল হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরাও বিপাকে পড়েছে।

তাই শনিবার চারঘাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে স্থানীয় সারদা ট্রাফিক মোড়ের ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে সড়কের মাঝ বরাবর বাঁশ দিয়ে অবরোধ করে রাখেন। তারা রাস্তার মাঝখানে চেয়ার পেতে বসেন। অনেকেই কাদা পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে যানবাহন ঠেকাতে থাকেন। এতে রাস্তার দুই পাশে শত শত যানবাহন দাঁড়িয়ে যায়। একইভাবে পদ্মা নদীতে বালু নিতে আসা ট্রাকগুলো আটকা পড়ে।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে চারঘাট পৌরসভার মেয়র একরামুল হক আসেন। এ সময় কাউন্সিলর নাজমুল হাসান বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কাদা পানিতে নেমে দাবির পক্ষে বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, স্থানীয় ব্যক্তিরা দুই বছর ধরে সড়ক নিয়ে ভুগছেন। সড়কের পাশে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতি বর্ষায় সড়কটি কাদা পানিতে ভরে যায়। শিক্ষার্থীরা স্কুল–কলেজে যেতে পারে না। এলাকাবাসীও দুর্ভোগের শিকার হন। এই সড়কের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা শুধু আশ্বাস দিয়েছেন। কোনো সমাধান করেননি।

নাজমুল হাসান বলেন, আজ (শনিবার) তাদের এখানে চারঘাট পৌরসভার মেয়র একরামুল হক দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করার জন্য এসেছেন। এরপর কাউন্সিলর জনগণের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণার জন্য মেয়রকে পানিতে নামার অনুরোধ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা মেয়রকে হাত ধরে কাদা পানিতে নামানোর চেষ্টা করেন। মেয়র কাদায় না নেমে কাউন্সিলরের হাত থেকে মাইক নিয়ে দাবির সমর্থনে বক্তব্য দেন।

মেয়র একরামুল হক বলেন, এই সড়ক সংস্কারের জন্য তিনি উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় বলেছেন। আসলে ১০ চাকার ট্রাকের কারণে রাস্তা দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। তিনি এলাকাবাসীকে আশ্বাস দেন যে এক সপ্তাহের মধ্যে এই রাস্তার কাজ শুরু হবে।

পরে তিনি অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য বিক্ষোভকারীদের অনুরোধ করে বলেন, এই অবরোধের কারণে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। সড়ক সংস্কার হবে।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা করতালি দিয়ে মেয়রকে অভিনন্দন জানান। এরপর বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন