দুই দিনের ব্যবধানে তালাক ছাড়াই মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়ে

  18-08-2022 06:08PM



পিএনএস ডেস্ক : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্নি ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামে প্রেম করে গোপনে বিয়ে করেছেন অনার্স পড়ুয়া মেয়ে। কিন্তু প্রেমের বিয়েতে সম্মতি না থাকায় বিয়ের দুদিন পরে মেয়েকে নিজ পছন্দের ছেলের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দিয়েছেন অধ্যক্ষ পিতা।

এদিকে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ না করিয়ে দুই দিনের ব্যবধানে তামান্না (১৯) নামের মেয়েটিকে নিজ পছন্দের পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ায় এলাকায় শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।

তামান্নার পিতা আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ উপজেলার গজালিয়া মহিলা আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ।

জানা গেছে, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার কাশিপুর গ্রামের তাজমুল শিকদারের ছেলে ইমন শিকদারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গজালিয়া গ্রামের আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহর মেয়ে তামান্নার।

প্রেমের সুবাদে গত ১১ আগস্ট পাটগাতী কাজী অফিসে ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক কাজির মাধ্যমে কলেমা পড়ে ও সরকারি রেজিস্ট্রার খাতায় সাক্ষর করে বিয়ে করে দুজন। পরে বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে তামান্নার পিতা আবু জাফর ক্ষিপ্ত হয়ে ১৩ আগস্ট বিকেলে কোটালীপাড়া উপজেলার চুরখুলি গ্রামের শরাফাত খানের বড় ছেলে জুয়েল খানের সঙ্গে আবার বিয়ে দেন মেয়ের।

এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। একজন মাদরাসার অধ্যক্ষ তার মেয়ের প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ না করিয়ে কীভাবে দ্বিতীয় বিয়ে দেয় এমন প্রশ্ন করেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একজন শিক্ষক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সেই শিক্ষক বলেন, ইসলাম ধর্ম অনুসারে যদি কোনো ছেলের সঙ্গে মেয়ের কালেমা পড়ে ও স্বাক্ষীদের সামনে কাজি অফিসে গিয়ে বিয়েতে আবদ্ধ হয়, তাহলে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ করিয়ে ৩ মাস ১৩ দিন পর মেয়ের বিয়ে অন্যত্র দেওয়া যায়। একজন মাদরাসার অধ্যক্ষ তার মেয়ের প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ না করিয়ে কীভাবে দ্বিতীয় বিয়ে দেয় তা বোধগম্য হয় না।

তামান্নার স্বামী ইমন শিকদার বলেন, আমরা ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক কলেমা পড়ে কাজির সামনে সাক্ষী রেখে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেনমোহরে দুজনে বিয়ে করি। ঘটনাটি জানার পরে মেয়ের বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে দুদিন পরে জোর করে মেয়েকে কোটালীপাড়ায় বিয়ে দেয়। বর্তমানে আমার স্ত্রী তামান্নার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।

এ ছাড়া ওর বাবা স্থানীয় কিছু লোকদের দিয়ে আমাকে ভয় দেখাচ্ছে এলাকায় গেলে মেরে ফেলবে। তাই আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত পেতে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা চাই।

এ বিষয়ে তামান্নার পিতা ও গজালিয়া মহিলা আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোনটি কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিএনএস/আলাউদ্দিন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন